মানবদেহে নতুন কোষের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের ফুসফুসের ভেতরে উপস্থিত পাতলা এবং খুব সূক্ষ্ম শাখায় এ কোষগুলো পাওয়া যায়। এর প্রধান কাজ শ্বাসতন্ত্রকে সুস্থ রাখা।
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এর সাহায্যে তারা মানুষকে ধূমপানজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে পারবেন। নতুন কোষের আকর্ষণীয় নামকরণ করা হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে রেসপিরেটরি এয়ারওয়ে সেক্রেটরি (আরএএস)। এগুলো ফুসফুসের ভেতরের স্নায়ুর শাখা ব্রঙ্কিওলে উপস্থিত থাকে। এটি রক্তের অভ্যন্তরে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বিনিময় করে।
আরএএস কোষগুলো স্টেম সেলের মতো। এগুলোকে ফাঁকা ক্যানভাস কোষ বলা হয়, কারণ এগুলো শরীরের ভেতরে যেকোনো নতুন অঙ্গ বা কোষ শনাক্ত করে। এটি ক্ষতিগ্রস্ত অ্যালভিওলি মেরামত করে এবং নতুন অ্যালভিওলি কোষ তৈরি করে। যাতে রক্তে গ্যাসের প্রবাহ ঠিক থাকে। গবেষকরা দেখেছেন, আরএএস কোষগুলো ফুসফুসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে।
কারণ এ কোষের সব কাজ ফুসফুসের সঙ্গে সম্পর্কিত সিস্টেমের মাধ্যমে চলে। বিজ্ঞানীরা একজন সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুস থেকে টিস্যু নিয়ে প্রতিটি কোষের ভেতরে উপস্থিত জিনগুলো বিশ্লেষণ করেন। তারপর আরএএস কোষগুলো শনাক্ত করা হয়।
পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক এডওয়ার্ড মরিসি বলেন, এটা আগে থেকেই জানা ছিল যে মানুষের ফুসফুসের শাখা-প্রশাখা অর্থাৎ বাতাস চলাচল ইঁদুরের ফুসফুস থেকে আলাদা। নতুন প্রযুক্তির বিকাশের কারণে আমাদের সুবিধা ছিল যে আমরা এই নতুন কোষটি খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এটার নমুনা পরীক্ষা করতে পেরেছি।
এডওয়ার্ড মরিসি এবং তার দল ফুসফুসে আরএএস কোষ খুঁজে পেয়েছেন, যা মানুষের কোষের মতো। আরএএস কোষের মাত্র দুটি প্রধান কাজ রয়েছে— প্রথমত, এগুলো কণা নিঃসৃত করে, যা ব্রঙ্কিওলগুলোতে প্রবাহিত তরলগুলোর জন্য একটি আস্তরণ হিসেবে কাজ করে। যাতে প্রথমে বাতাস ত্যাগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এছাড়াও ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। দ্বিতীয় যে কাজটি করে তা হলো— তারা প্রোজেনিটর কোষের মতো কাজ করে, অর্থাৎ অ্যালভিওলার টাইপ-২ কোষের মতো। এটি একটি বিশেষ ধরনের কোষ, যা ক্ষতিগ্রস্ত অ্যালভিওলি মেরামত করার জন্য রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে।
খুলনা গেজেট/কেএ