পৃথক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর ও বিএনপির সহ স্বেচ্ছাবিষয়বক সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েলসহ বিএনপির ২১ জন নেতাকে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আদালত অবমাননার অভিযোগে হাবিবুর রহমান হাবিবকে ৫ মাসের কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও বিচারপতি বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ কারাদণ্ড দেন। র্যাব গ্রেপ্তারের পর বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবকে হাইকোর্টে হাজির করা হয়।
এদিকে যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীরসহ বিএনপির ১১ জন নেতাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত এ রায় দেন। ২০১৩ সালে উত্তরা থানার একটি মামলায় তাদের বিরুদ্ধে এ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। মামলায় ৭৩ জন আসামি ছিলেন। অন্যরা খালাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
ওদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, গত ৪০ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা ২৬টি মিথ্যা মামলায় কথিত বিচার কার্যক্রমের নামে বিএনপির ৪১৫ নেতাকর্মীকে সাজা দিয়েছেন ঢাকার আদালত। এখন গায়েবি মামলার মতো গায়েবি সাজা দেয়া হচ্ছে। আগে মৃত ব্যক্তি কবর থেকে উঠে ভোট দিতো আর এখন মৃত ব্যক্তিকে সাজা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে এক দশক আগে রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় একটি প্রাইভেট কার ও একটি বাসে আগুন দেয়ার মামলায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ নয়জনকে তিন বছর তিন মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম এই রায় দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মাসুদ পারভেজ।
কারাদণ্ড পাওয়া অন্য আট আসামি হলেন- পল্টন থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন, পল্টন থানা যুবদলের তৎকালীন নেতা লিওন হোসেন, উত্তম কুমার, ভাসানী জাহাঙ্গীর, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক ও রুবেল। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে দণ্ডবিধির ১৪৩ ধারার (বেআইনি সমাবেশ) অপরাধে তিন মাস ও দণ্ডবিধির ৪৩৫ ধারার (বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে আগুন দেওয়া) অপরাধে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ৯ আসামির কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। পরে আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের আইনজীবী ইলতুতমিশ সওদাগর বলেন, তাঁর মক্কেল ন্যায়বিচার পাননি। তাঁরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
মামলার এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, ১৮ দলের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর দুপুরে নয়াপল্টন এলাকার ভিআইপি রোডে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১০ থেকে ১৫ জন নেতা-কর্মী মিছিল করছিলেন। একপর্যায়ে মিছিলকারীরা হোটেল অরচার্ড প্লাজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেন। খবর পেয়ে পল্টন থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে পুলিশের দুজন কনস্টেবল আহত হন। পরে মিছিলকারীদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা রাজউক ভবনের সামনে থাকা একটি বাসে আগুন দেন। এ ঘটনায় পল্টন থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মনিবুর রহমান বাদী হয়ে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর কাদের ভূঁইয়াসহ ৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
খুলনা গেজেট/ টিএ