এক বছরের মধ্যে তিন বার বিচারক পরিবর্তন হয়েছে। শূন্যস্থান পূরণে বারবার বিলম্ব হয়। গত এক মাস যাবৎ শূন্য পদ পূরণ হয়নি । এর আগে করোনার দীর্ঘ বন্ধে বিচার বিলম্ব হয়। খুলনা বিভাগীয় স্পেশাল জজ কোর্টে মামলার জট পড়েছে। এ আদালতে বিচারাধীন মামলা ৪০৩টি ।
২০১৯ সালে বিচারক আব্দুর সালাম বদলি হওয়ার পর এক বছরের মধ্যে শূণ্য পদ পূরণ হয়নি। দায়িত্বে আসেন বিচারক জিয়া হায়দার। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে আলমাস হোসেন মৃধা দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি গত ১০ অক্টোবর গোপালগঞ্জে বদলি হন। গত একমাস যাবৎ আবারও বিচারকের পদ শূন্য। আদালতে ১৩২টি বিশেষ মামলা, ১৮৭টি ক্রিমিনাল আপিল, ২২টি টাইটেল আপিল মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে রয়েছে দায়রা, অর্পিত আপিল ও ক্রিমিনাল রিভিশন আপিল মামলা। প্রতিদিন গড়ে ১৫টি মামলার ধার্য দিন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার মজিবর রহমান, শেখ সেলিম আল আজাদ ও লুংফুল কবীর নওরোজ প্রতিদিন রাষ্ট্র পক্ষে হাজিরা দিচ্ছেন। এসময়ে তারা সম্মানীও পাচ্ছেন । আসামি ও স্বাক্ষীরা আদালতের বারান্দায় প্রতিদিন আসছেন। বন্দী আসামিদের জন্য জামিন শুনানি হচ্ছে না ।
এ আদালতের উল্লেখযোগ্য মামলার মধ্যে রয়েছে আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের ঔষুধ চুরি। এর সাথে ১৩ জনের সংশ্লিষ্টতা। এ মামলার অন্যতম আসামি আবাসিক মেডিকেল আফিসার ডা: অলোক কুমার মন্ডল , ফার্মাসিস্ট দেব প্রসাদ রায়, সুধাংশু কুমার বাড়ৈ। প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর হোসেন ও ম্যানেজার লিয়াকত হোসেনের বিরুদ্ধে পাট না কিনে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ, পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের সার আমদানি না কারে প্রাইম ব্যাংক খুলনার ভিপি সৈয়দ জহুরুল হক, কাজী রবিউল ইসলাম ও আমদানিকারক সিংগুয়া ট্রেডের মালিক শেখ আবু রাসেদের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ, ২৮ কোটি টাকা মূল্যের পাট ক্রয় না করে সোনালী ব্যাংক, দৌলতপুর কর্পোরেট শাখার কর্মকর্তা রুহুল আমিন, সিরাজুল ইসলাম ও ইস্টার্ণ ট্রেডার্স- এর মালিক সঞ্জিব কুমার দাসের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ-এর অভিযোগের মামলাও রয়েছে।
রুপালী ব্যাংকের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার আসামি গরীব নেওয়াজ ক্লিনিকের মালিক আব্দুস সাত্তার ও আব্দুর রহমান ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারা মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন। মোংলা পৌরসভার চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মৃত্যুবরণ করায় পাঁচটি মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন।
প্রসঙ্গক্রমে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার মজিবর রহমান উল্লেখ করেন, ১ শ ৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিস্পত্তি হওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের অভাবে তা বিলম্ব হচ্ছে। করোনার দীর্ঘ বন্ধের কারণে বিচার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে ছুটি থাকছে। উচ্চ আদালতের স্টে হওয়া মামলা ভ্যাকেট হয়ে বিশেষ আদালতে এসেছে। এ মামলারও বিচার কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না।
খুলনা গেজেট/এএ