বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রস্তাবিত ২০২১-২২-এর বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রস্তাবিত বিশাল অংকের বাজেট কোভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা চরমভাবে উপেক্ষিত। করোনায় গত এক বছরে যে আড়াই কোটি মানুষ কর্মহীন অবস্থায় দরিদ্র হয়ে পড়েছে, তাদের জীবিকা ও কর্মসংস্থানের জন্য কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ গত বছরের চাইতে কয়েক হাজার কোটি টাকা এ খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও, তা সামগ্রিক জিডিপি-র ১ শতাংশের কিছু উপরে, যা প্রতিবেশি নেপাল, ভারত, শ্রীলংকা এমনকি পাকিস্তানের চাইতে কম। করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন সম্পর্কে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য মাসে পঁচিশ লাখ ভ্যাকসিন দেয়া হবে। এতে অবশ্য সারাদেশে ভ্যাকসিন দিতে কমপক্ষে চার বছরের উর্ধ্বে সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, টিকা যে কবে নাগাদ আসবে তার কোনো সঠিক উল্লেখ নেই। অত্যন্ত চাতুর্যের সাথে বন্ধকৃত পাটকলের বিষয়টি অনুল্লেখ। বরং পাটকলকে ব্যক্তিমালিকানায় তুলে দেয়ার বিষয়টি বাজেটে স্পষ্ট করা হয়েছে। অথচ কথা ছিল পিপিপি’র মাধ্যমে আধুনিকায়ন ও পুনঃচালুকরণ। একই কথা চিনিকলের ক্ষেত্রেও। কৃষি ক্ষেত্রের অবস্থা একই রূপ। কোভিডের দু’বছর পরপর বাম্পার ফলন ফলালেও কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ সেই পুরান ছকে বাধা। গত বছর সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অত্যন্ত করুণ। ফলে সরকারী গুদাম শূন্যের পর্যায়ে। খাদ্যশস্যের বাজারের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া হয়েছে সিন্ডিকেটের হাতে যার ফলশ্রুতিতে ফসলের ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়েই চলেছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাজেটের ১৫.৪ শতাংশ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ১১% শতাংশের কিছু উপরে। কোভিড-এর কারণে যেখানে সমগ্র শিক্ষা জীবন দেড় বছর পিছিয়ে পড়েছে, সেখানে অনলাইন শিক্ষাসহ বিকল্প শিক্ষার জন্য যে প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন ছিল, তা অনুপস্থিত। অথচ বাজেটে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নতুন করে করারোপ করা হয়েছে, যা শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতিতে একেবারেই অযৌক্তিক।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে অত্র এলাকার মানুষ মারাত্মক দুরাবস্থার মধ্যে পতিত হয়। কিন্তু অত্র উপকূলীয় অঞ্চলের স্থায়ী ও টেকসই ভেড়ী বাঁধ নির্মাণের কোনো প্রকার অর্থ বাজেটে রাখা হয়নি। বর্তমান বাজেট জনগণের জীবন ও জীবিকা নয়, ধনী-সামরিক-বেসামরিক আমলার, ক্ষমতার বলয়ে অতি যে শক্ত আঁতাত গড়ে উঠেছে, তাদের স্বার্থরক্ষায় বাজেটে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিবৃতি প্রদান করেছেন, ওয়ার্কার্স পার্টি খুলনা জেলা সভাপতি কমরেড এড. মিনা মিজানুর রহমান, মহানগর সভাপতি কমরেড শেখ মফিদুল ইসলাম, জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড আনসার আলী মোল্লা, মহানগর সাধারণ সম্পাদক কমরেড এস এম ফারুখ-উল ইসলাম, জেলা ও মহানগর সম্পাদকম-লীর সদস্য কমরেড দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, কমরেড গৌরাঙ্গ প্রসাদ রায়, কমরেড শেখ মিজানুর রহমান, কমরেড মনির আহমেদ, কমরেড খলিলুর রহমান, কমরেড আব্দুস সাত্তার মোল্লা, কমরেড নারায়ণ সাহা, কমরেড আমিরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য শেখ সাহিদুর রহমান, কমরেড মনিরুজ্জামান, কমরেড সন্দীপন রায়, কমরেড রেজাউল করিম খোকন, কমরেড আঃ হামিদ মোড়ল, কমরেড কৌশিক দে বাপী, কমরেড মোঃ আলাউদ্দিন, কমরেড মনির হোসেন, কমরেড বাবুল আখতার, কমরেড আরিফুর রহমান বিপ্লব, কমরেড অজয় দে, কমরেড এড. কামরুল হোসেন জোয়ার্দ্দার, কমরেড হাফিজুর রহমান, কমরেড গৌরী মন্ডল প্রমুখ। সূত্র : প্রেস রিলিজ।
খুলনা গেজেট/এনএম