দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম কাওছার (৩৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত) ফয়সাল হোসেন ওরফে প্যাডিকে গ্রেপ্তার করেছে গাংনী থানার পুলিশ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম র্যাব-২ শেরেবাংলা নগরের সহযোগিতায় ঢাকার তুরাগ থানার বাউনিয়া এলাকা থেকে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এতে গাংনী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জহির রায়হান, এসআই সুফল কুমার ও এএসআই মাহাবুব হাসান ও সঙ্গীয় ফোর্স অংশ নেন।
গাংনী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার ফয়সাল হোসেন ওরফে প্যাডি গাংনী পৌরসভার শিশিরপাড়া গ্রামের মাহাতাব আলীর ছেলে।
ফয়সাল হোসেন প্যাডির বিরুদ্ধে দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম কাওছার, কক্সবাজারের আলামিন হত্যা মামলাসহ একটি অস্ত্র আইনে ও বিস্ফোরক এবং ছিনতাই মামলা আদালতে রয়েছে। হত্যা মামলা দুটিতে তাকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দৈনিক বণিক বার্তার বিজ্ঞাপন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম কাওছার (৩৮) ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে বাসা থেকে বের হন। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রোকসানা পারভীন ওই দিন তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জাহাঙ্গীরের খবর জানতে একাধিকবার ফয়সালের সঙ্গে কথা বলে জাহাঙ্গীরের পরিবার। কিন্তু ফয়সাল তাদের বলেন, তিনি কিছুই জানেন না। পরে রাজধানীর খিলক্ষেত নামাপাড়ার ২১১/১-এ নম্বর বাড়ির পাঁচতলার একটি মেসে সুটকেসের ভেতর থেকে জাহাঙ্গীরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রোকসানা পারভীন বাদী হয়ে ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর খিলক্ষেত থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার এসআই আব্দুল জলিল। ওই বছরের ২৫ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
২০২১ সালে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ৭ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখান এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জাহাঙ্গীর আলমের খালাতো ভাই এইচএম ফয়সাল ওরফে প্যাডিকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর তিন আসামি নাজমুল হাসান ওরফে রাকিব, রায়হান হাসান সারোয়ার ও ফাহিম হাসান খানকে যাবজ্জীবন দেন।
এসময় প্রধান আসামি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্যাডি পলাতক ছিলেন। ওই সময় আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গাংনী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক জহির রায়হান জানান, ফয়সাল হোসেন ওরফে প্যাডি তুরাগ এলাকায় রুবেল হোসেন পরিচয় সাড়ে চার বছর আগে বিয়ে করে বসবাস করছিলেন। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে