‘খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলার মানুষকে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নির্ভর করতে হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-খুমেকের ফরেনসিক বিভাগের ওপর। ওই রিপোর্টের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে খুন, অপমৃত্যু, ধর্ষণসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার ন্যায় বিচার। কিন্তু এই ফরেনসিক বিভাগের সবকটি পদ বর্তমানে শুণ্য। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায়বিচার প্রার্থীরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেই দেখা মিলবে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও অপমৃত্যুর শিকার মানুষদের পরিবারের সদস্যদের ফরেনসিক রিপোর্ট প্রাপ্তির বিড়ম্বনার চিত্র।’
রবিবার সকাল ১০ টায় নগরীর কনসেন্স মিলনায়তনে জনউদ্যোগের আয়োজনে খুলনা মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি, চিকিৎসক ও ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সংকট নিরসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না। এসময় উপস্থিত ছিলেন জনউদ্যোগ, খুলনা নারী সেলের আহবায়ক এড. শামীমা সুলতানা শীলু, সিপিবি নেতা মিজানুর রহমান বাবু, নারী নেত্রী নূরুন নাহার হীরা, সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দা তৈফুন নাহার, আগুয়ান ৭১ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ আব্দুল্লাহ চৌধুরী, মহানগর সভাপতি আবিদ শান্ত, জনউদ্যোগ যুব সেলের নূর আলম, সাংবাদিক ইয়াসীন আরাফাত রুমী ও জনউদ্যোগের খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন।
বক্তারা বলেন, সময়মত ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ হচ্ছে না, হচ্ছে না পরীক্ষা, ফলে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক থেকে প্রভাষকসহ ৬টি পদের সবকটিই শুণ্য। তাই গত কয়েক মাস ধরে ফাইলবন্দি শতাধিক রিপোর্ট। ফলে কেবল ন্যায়বিচার প্রত্যাশিরা নয়, ফরেনসিক মেডিসিনের ক্লাস না হওয়ায় মেডিকেল শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা বঞ্চিত। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গত তিন মাসে ৫৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর বাকীরা ১৮ বছরের উর্দ্ধে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার হয় খালিশপুর থানা এলাকায় ৬৫ বছর বয়সী এক নারী। এছাড়া বেশির ভাগ ঘটনাই খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও তেরখাদা উপজেলার। কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাড়ে ৪ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে গত ১৮ আগস্ট ওসিসিতে ভর্তি হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলার তেরখাদা উপজেলায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া মুজগুন্নীতে গত ২৫ অক্টোবর ২ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ওসিসিতে ভর্তি হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ ও ওসিসি’র ল্যাবে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। সূত্র : প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/এনএম