গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতের দশটি রাজ্যে বার্ড ফ্লু দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এশিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জারে আক্রান্ত হয়ে শত শত পাখিও মারা গেছে হরিয়ানা ও কেরালায়। আক্রান্ত পাখিরা সীমান্ত অতিক্রম করে পশ্চিম বঙ্গে আসতে পারে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দ্রুত বার্ড ফ্লু বিস্তার লাভ করায় পুঁজি বাঁচাতে কম মূল্যে কক, লেয়ায় ও সোনালী জাতের মুরগী বিক্রি করছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খামারীরা। এর আগে ২০০৮ সালে বার্ড ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মুরগী মারা যাওয়ায় খামারীরা পুঁজি হারায়।
ভারতের উত্তরাখন্ড, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, কেরালা, রাজেস্থান, হরিয়ানা, হিমাচল, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ ও দিল্লিতে বার্ড ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়েছে। সর্বশেষ আক্রান্ত হয় উত্তরখন্ডে। পশ্চিমবঙ্গের চিড়িয়াখানা বন্ধ করা হয়েছে। জলাধারের আশে পাশে অতিথি পাখির মৃত দেহ পাওয়া যাচ্ছে।
ভারতের একটি প্রভাবশালী বাংলা দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত সংক্রমণের কোনো খবর নেই। তবে বার্ড ফ্লুর প্রভাব পড়েছে রাজ্যের পোল্ট্রি শিল্পে। পশ্চিমবঙ্গ পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ায় গত দু’দিনে পশ্চিমবঙ্গে মুরগির মাংসের বিক্রি ২০ শতাংশ কমেছে। তবে বিক্রেতারা বেশ আতঙ্কে রয়েছেন। নিউ মার্কেট মুরগি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ মুসতাকিম জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ এখনও মুরগির মাংস কিনতে আসছেন ঠিকই, তবে বিভিন্ন রাজ্যে যে হারে বার্ড ফ্লু বাড়ছে, তাতে আমাদের চিন্তাও বাড়ছে।
এদিকে বার্ড ফ্লু’র আতংকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার খুলনা নগরীর অলি-গলিতে আধা কেজি ওজনের সোনালী, কক, লেয়ার, ছেছো জাতের মুরগী প্রতি পিস ৫০ টাকায় বিক্রি করছে খামারীরা। বাজারেও মুরগীর দাম কিছুটা কমেছে। কমেছে ডিমের দামও। ইজিবাইক যোগে মাইকিং করে সন্ধ্যার পর ১৭টি মুরগীর ডিম ১শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে নগরীতে।
খুলনা বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম মোল্লা খুলনা গেজেটকে জানান, খামারীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পোল্ট্রি খামারের পাশে মরা পাখি পাওয়া গেলে তা দ্রুত অপসারণ ও পরিক্ষা নিরীক্ষার জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের নিকট পাঠাতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে খুলনা বিভাগের ১১ হাজার ৬৪৮ জন খামারীকে এ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই