ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে সোমবার মধ্যরাত থেকে উপকূলীয় খুলনা জেলার পাইকগাছায়শুরু হয়েছে মাঝারি বৃষ্টিপাত। এছাড়াও বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার সকল নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন।
এদিকে সিত্রাং এর প্রভাবে উপজেলার দ্বীপ বেষ্টিত ইউনিয়ন সোলাদানা, রাড়ুলী, মাহমুদকাটির জেলে পল্লী সহ রামনাথপুর এলাকার মানুষ কপোতাক্ষ ও শিবসা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নোনা পানিতে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলার হরিঢালীর ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শংকর বিশ্বাস বলেন, কপোতাক্ষের উগরে দেওয়া পানিতে মাহমুদকাটি জেলে পল্লীর বিস্তীর্ণ এলাকা দফায় দফায় প্লাবিত হয়েছে। এমনকি নদী ভাঙনে ওই এলাকার বহু জেলে পরিবার সহায় সম্বল হারিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সিত্রাংয়ের প্রভাবে কপোতাক্ষের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ও বৃষ্টির পানিতে মাহমুদকাটির জেলেপল্লী সহ রামনাথপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া উপজেলার কপিলমুনির বিভিন্ন এলাকার স্থায়ী বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সিত্রাংয়ের প্রভাবে রোববার মধ্যরাত থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল থেকে দমকা হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতে পানি সরবরাহের যথাযখ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মৎস্য ঘের ও বিলের আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্তের শঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, খুলনা জেলা ৭নং বিপদ সংকেতের আওতাভুক্ত হয়েছে। আর পাইকগাছা একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হওয়ায় সে ব্যাপারে সকলকে অবগত করা হয়েছে। সিত্রাং মোকাবেলায় উপজেলার ১০৮ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা রোববার থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে। সংকেত বাড়লে তাদের মাধ্যমে সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে। এছাড়া উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সকলের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সিত্রাং মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর ফলে দেশের সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেত বাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর,২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতেও পাইকগাছায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়।