এক পায়ে লিখে পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে জয় করেছেন জিপিএ-৫। এবার এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ জয় করলেন দুই হাত ও এক পা হারানো তামান্না আক্তার নুরা। এখন স্বপ্ন দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বিসিএস ক্যাডার হবার।
রোববার সারাদেশে একযোগে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ ফলাফলে যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধিনে পরীক্ষা দেয়া তামান্নার জিপিএ-৫ প্রাপ্তির খবর পাওয়া যায়। তার এ সফলতায় খুশির জোয়ার বইছে পরিবারে, পাড়ায় ও তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। গ্রামের আর দশটা পরিবারের কাছে এখন এক আদর্শ ও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন তামান্না।
অদম্য মেধাবী তামান্নার বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম রওশন আলী। তিনি স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদরাসার ননএমপিও (বিএসসি) শিক্ষক। মায়ের নাম খাদিজা পারভীন শিল্পী। তিনি গৃহিণী। পরিবারে তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়। জন্ম থেকেই তার দুই হাত ও এক পা নেই। তাই অবশিষ্ট এক পা তার সম্বল। এই এক পা দিয়েই তিনি ছোটবেলা থেকে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং পর্যায়ক্রমে মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন। তিনি এবার যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। ফলাফলে তারা প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে আরো একটি এ প্লাস।
ফলাফল শুনার পর উচ্ছ্বসিত তামান্না বলেন, এবার তার একটিই স্বপ্ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেখানে গবেষণাধর্মী কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস ক্যাডার হতে চান। তারপর দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবেন বলে স্বপ্ন বুনছেন। যদিও পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েনে এ স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা তা তিনি জানেন না। তাই সহযোগিতার আশায় তামান্না ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও লিখেছেন।
এ বিষয়ে তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, ছোটবেলা থেকেই তামান্নার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি উপলব্ধি করে এখন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে গবেষক ও বিসিএস ক্যাডার হতে চায়। জানি না তার স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা। তার স্বপ্ন এখন আল্লাহ পূরণ করতে পারে।