পলিথিনে সয়লাব খুলনা। বড় বড় শপিং মল থেকে শুরু করে কাঁচা বাজার পর্যন্ত এর কদর বেড়েছে। অথচ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যবহার বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না কেউ। এসব যেন দেখারও কেউ নেই!
২০০২ সালের কথা। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ কারা হয়েছিল। কিন্তু নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যবহার আগের তুলনায় এখন ব্যাপক আকারে বেড়েছে। মুদি দোকান থেকে কাঁচা বাজার সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি। যা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ বাদী সংগঠন বেলা, খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ২০১৯ সালের শুরুতে পলিথিন ব্যবহার বন্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। সেখান থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২১ সালের মধ্যে এর ব্যবহার কামাতে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এর ব্যবহার হচ্ছে দ্বিগুন। চারিদিকে শুধু পলিথিনের স্তুপ দেখা যায়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিকারক হচ্ছে পাতলা পলিথিন। এগুলো একবার মাত্র ব্যবহার করা হয়। এ পলিথিন মাটিতে পচে না। ফলে মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। মাটির সার উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। কৃষি কাজের ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি ব্যবহারের ফলাফল ভাল না। অধিকাংশ হোটেলে ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাষ্টিকের তৈরি প্লেট। এগুলোও সহজে নষ্ট হয়না। এগুলো ব্যবহার করে রাস্তুায় ছুড়ে ফেলা হচ্ছে, যা ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে শেষ করে দিচ্ছে। পলিথিন ব্যবহারের কিছু বিকল্প ভাবা দরকার। এটা বন্ধে তাদের সংগঠন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছে। কিন্তু কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ইতিবাচক মনোভাব প্রত্যাশা করেছেন।
দিন মজুর সিদ্দিক সানা পলিথিনের ব্যাগে বাজার নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। জানতে চাইলে তিনি জানান, এর ক্ষতিকারক দিক জানতে পারলে তিনি হয়তো আর পলিথিন ব্যবহার করতেন না।
কথা হয় খুলনা সান্ধ্য বাজারের ব্যবসায়ী ফয়সালের সাথে। তিনি জানান, এক একটি থলের দাম পাঁচ টাকা। অনেকে দাম না দিয়েই বাজারের ব্যাগ নিয়ে যায়। তাই লস কমাতে তিনি পলিথিনের ব্যাগ রেখেছেন। তবে তিনি এর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে অনভিজ্ঞ।
পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিন সয়লাবের ব্যাপারে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা রীতিমতো লুকোচুরি খেলেন।
খুলনা গেজেট/এএ