খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেয়ার আহবান বিএনপির: মির্জা ফখরুল
  চলমান ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮

নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন দিতে ভয় কেন : ফয়জুল করীম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বাংলাদেশে একজন মুসলমান বেঁচে থাকতে এদেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম হবে-ইনশাল্লাহ। সরকার শুধু উন্নয়ন, উন্নয়নের কথা বলছেন। আমি প্রশ্ন করতে চাই যদি উন্নয়ন করেই থাকেন তাহলে নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দিতে ভয় পান কেন ? যেমন রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন হয়েছে, তেমন চোর-ডাকাত, ধর্ষকদের উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের মহাসড়কেও যদি চলে যান, কিন্তু মানুষের ভোট অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হন, তাহলে গোটা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আরেকটা আন্দোলন করবে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর নিউমার্কেট বায়তুন নুর চত্বরে ১৫ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। দলের খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটি এই সমাবেশের আয়োজনে বিকেল ৩ টায় এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ।

ফয়জুল করীম বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছি। কিন্তু মানুষের শান্তি দেখিনি। আজকে দেশের স্বাধীনতার বয়স ৫১ বছর। এখনও আমাকে যদি স্বাধীনতার জন্য লড়তে হয়, মানবিক মর্যাদাকে বাস্তবায়নের জন্য লড়তে হয়, মানুষের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে লড়তে হয়, তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কোন বিষয় থাকতে পারে না। মুসলমানদের দেশে আজকে নাস্তিকরা ইসলামকে কটুক্তি করবে এই সাহস পায়, না এখনও আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। আরেকটা স্বাধীনতার জন্য আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন চোর-ডাকাতদের জাতি প্রতিহত করবে। বালিশ, পর্দা চোর-রোরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি প্রশ্ন রাখেন ৮৫ হাজার কোটি টাকা সুইস ব্যাংকে এবং ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হলো কেমন করে। নারী নেতৃত্ব দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, আজকে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষাকে দূর করার চক্রান্ত করতেছে। পড়াবেন ইসলাম শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা কিন্তু পরীক্ষা নিবেন না। এরকম পড়া কোন পাগলেও পড়ে না। শিক্ষামন্ত্রী গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে অটো পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমস্ত ছাত্রদেরকে মুর্খ বানানোর চক্রান্ত করছে। এই শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চাই, ইসলামী শিক্ষার বাস্তবায়ন চাই।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিরোধ করতে হবে। তিনি সরকার প্রধানের সমালোচনা করে বলেছেন, দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত দিয়েছেন, কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ সফর বন্ধ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মতো আরেকটি গণআন্দোলনের মধ্যদিয়ে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য দলীয় কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকা ও ধানের শীষের পরিবর্তে ইসলামী আদর্শের বিজয়ের জন্য আহবান জানিয়েছেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় দলের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, রাজনীতি বিষাক্ত হয়েছে। একমাত্র ইসলামী আন্দোলন ছাড়া আর কেউ পরমত সহিষ্ণু রাজনীতি করেন না।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় দলের মহাসচিব মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কালো মেঘের ছায়া নেমেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারে এ দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাদকের কারণে সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পাশ্ববর্তী রাষ্ট্রকে যা যা করতে। যেন তেন নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে যাবো কি যাবো না তখন ভেবে দেখবো। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে ৩০০ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশ নিবে। ইসলামী আন্দোলন কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে ঘা সৃষ্টি হয়েছে। সমাজের কোথাও শান্তি নেই। চিনি, তেল, ডাল, চালসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। আবার বলছেন দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। দেশের মানুষ গড়ার কারিগর হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ইসলাম প্রতিষ্ঠায় যারা বাধা হয়ে আসবে, তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু হবে। দেশের পরিস্থিতিতে সুস্থ মানুষের বসবাসের উপযোগর নয়। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে লাগাম টানেন না হলে বিদায় নেন।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন ইসলামী আন্দোলনের খুলনা জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ ইমরান, নগর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা ইমরান হোসেন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কেএম আলআমিন আহসান, সৌদি আরব শাখার যুগ্ম সম্পাদক আবু আব্দুল্লাহ মাহামুদী, গোপালগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তসলিম হোসেন শিকদার, পিরোজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হাসান, নেতা মাওলানা সোয়াইব হোসেন, মুফতি রবিউল ইসলাম রাফি, শ্রমিক আন্দোলনের নেতা মাহাবুবুল আলম, গাজী মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, মো. আবুল কাশেম, মো. মাইনুদ্দিন, ছাত্রনেতা এনামুল হাসান সাইদ, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ফরহাদ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন নগর ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দীন ও জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ গালিব।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!