খোলা আকাশের নীচে চলছে কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং কয়রা গ্রামের বিরসা মুন্ডা প্রভাতি স্কুলের পাঠদান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইনিশিয়েটিভ ফর কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট ( আইসিডি) এর উদ্যোগে বিরশা মুন্ডা প্রভাতি স্কুলটি ২০১৮ সালে গোলপাতার ছাওনী ও বেড়া দিয়ে পিছে পড়ে থাকা অসহায় মুন্ডা ক্ষুদ্র নৃ-তান্ত্রিক জনগোষ্ঠির শিশুদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে। পিছিয়ে পড়ে থাকা শিশুদের স্কুলের পাঠ প্রস্তুতসহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আদি বাসিদের অবদান সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দেওয়া হয়। যে সকল ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে যায় না তাদেরকে ডেকে এনে সকাল ও সন্ধ্যায় দেওয়া হয় শিক্ষা।
আশার আলো দেখতে থাকে মুন্ডা সম্প্রদায়ের শিশুরা। আদিবাসি শিশুদের সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ নেয় আইসিডি। তবে ২০২০ সালের ২০ মে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে ভেঙ্গে দিয়ে যায় স্কুলটির কাঠামো। আম্পানের ৭ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো তৈরি হয়নি স্কুলটির কাঠামো। খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ধারে একটি তাবু (ত্রিফল) টানিয়ে প্রচন্ড ঠান্ডার ভিতরে মাটিতে বসে চলছে প্রায় শতাধিক শিশুর পাঠদান।
বিরসা মুন্ডা প্রভাতী স্কুলের শিক্ষিকা বাসন্তী মুন্ডা খুলনা গেজেটকে বলেন, পিছিয়ে পড়ে থাকা মুন্ডা সম্প্রদায়ের শিশুদেরকে সকালে ও সন্ধ্যায় স্কুলের পাঠদান প্রস্তুতসহ আমরা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ক্লাস নেই। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় আম্পানে স্কুলটির কাঠামো ভেঙে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান দিতে হচ্ছে।
আইসিডির প্রতিষ্ঠিতা আশিকুজ্জামান আশিক খুলনা গেজেটকে বলেন, মুন্ডা সম্প্রদায়ের বাচ্চারা স্কুলে ঠিকমতো যায় না। তাদের পিতামাতারাও খোঁজ খবর রাখেনা তাদের সন্তান স্কুলে যাচ্ছে কিনা। আমরা মুন্ডা সম্প্রদায়ের শিশুদের সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে শিশুদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে সকালে ও সন্ধ্যায় স্কুলের পাঠ প্রস্তুত করা সহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে আদিবাসীদের ভূমিকা সম্পর্কে তাদের জানানো হয়। কিন্তু ৭ মাস আগে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে আমাদের স্কুলের কাঠামো ভেঙ্গে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে তাদেরকে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কোনো সহযোগিতা পেলে স্কুলটির কাঠামো আবারও তৈরি করতে পারবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস খুলনা গেজেটকে বলেন, মুন্ডা শিশুদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারে অসাধারণ ভূমিকা রাখছে আইসিডি। তাঁদেরকে সাধুবাদ জানাই। এ ধরণের উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
খুলনা গেজেট/ এনএস/ এনএম