নড়াইলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা, সাংবাদিকসহ ৭২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইলের আমলী আদালতে মামলাটি করেন সদর উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলনে গুলিবিদ্ধ মো. সোহান বিশ্বাসের চাচা ও বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.ওয়াহিদুজ্জামান।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. কাজী জিয়াউর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে নড়াইল সদর থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজামুদ্দিন খান নিলু, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ কুন্ডু মিটুল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশিষ কুমার বিশ্বাস, মাহামুদুল হাসান কায়েস, সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আন্জুমান আরা, যুবলীগের সভাপতি গাউছুল আজম মাসুম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তোফায়েল মাহমুদ তুফান, মরফিদুল হাসান ওরফে শিল্পী মিনা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক সপ্নিল শিকদার নীল, জেলা
সেচ্ছাসেবকলীগের সধারণ সম্পাদক ও আউড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস এম পলাশ, সভাপতি তরিকুল ইসলাম উজ্জল, সময় টিভির নড়াইল প্রতিনিধি সাংবাদিক সৈয়দ সজিবুর রহমান সজিবসহ মোট ৭২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সারা দেশে বৈসম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাদীর ভাইপো মো. সোহান বিশ্বাস ৪ আগস্ট বৈসম্য সারাদেশের সাধারণ জনগন একত্রিত হন। এসময় মিছিল নিয়ে মাদ্রাসা বাজার থেকে নড়াইল শহরের দিকে স্লোগান দিতে দিতে যাওয়ার পথে দুপুর দেড়টার দিকে মাদ্রাসা বাজারের পশ্চিম পাশে তেলের পাম্পের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর পৌছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামিরাসহ অজ্ঞাত নামা ৪০০ থেকে ৫০০ জন তাদের গতিরোধ করে। পরে মামলার প্রধান আসমি নিজাম উদ্দিন খান নিলুর হুকুমে, মাহমুদুল হাসান কায়েস শর্টগান দিয়ে ছাত্র জনতার উপর কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে বাদীর ভাইপো সোহানের বুকের বাম পাশে, পেটের বাম পাশে এবং বাম পায়ে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। তখন স্বপ্নীল শিকদার নিল ও আসামি গাউছুল আজম মাছুম শর্টগান দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র জনতার উপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এসময় গুলি লেগে আরো ৩জন আহত হয়।
এই সময় অন্যান্য আসামিদের মধ্যে কয়েক জন ছাত্র জনতার মিছিলকে ছত্র ভঙ্গ করার জন্য তাহাদের কাছে থাকা হাত বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। যার ফলে ছাত্র জনতার মিছিল ছত্র ভঙ্গ হয়ে ছাত্র জনতা চতুর্দিকে দৌড়াদৌড়ী করে প্রাণ রক্ষা করে। পরে সোহানকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে খুলনা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। এরপর তাকে ঢাকায় নিয়ে সেখানকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে সোহান চিকিৎসাধীন। এছাড়া অন্যন্য আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা ও থানায় মামলা না নেয়ায় আদালতে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি