খুলনার পাইকগাছায় কাজ শুরুর দু’বছরেও শেষ হয়নি বোয়ালিয়া বিজ্রের সড়ক উন্নয়নের কাজ। ঠিকাদারের চরম গড়িমসি ও অবহেলায় নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষেও উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পাকাকরণ কাজ শেষ হয়নি।
প্রকল্প অনুযায়ী সড়কে বছর খানেক আগে ইটের খোঁয়া বিছিয়ে রোলার দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমছে ডোবাগুলিতে। পথচারি থেকে শুরু করে প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন।
স্থানীয়রা এর জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করে সমস্যা সমাধানে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বোয়ালিয়া ব্রিজ সড়কটি উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। পাইকগাছা থেকে রাড়ুলী, বাঁকা বাজার আশাশুনির দরগাহপুর ও সাতক্ষীরার সদরে সহজে যাতায়াতের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
সরেজমিনে এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে মোটরসাইকেল, ভ্যান, শত শত হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে থাকে। প্রধান সড়ক থেকে শুরুতে বোয়ালিয়া মোড়ে অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, তিনটি অটো রাইস মিল, তেল মিল, বোয়ালিয় বীজ উৎপাদন খামার, হ্যাচারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অবস্থান এ সড়কেই। বিশেষ করে উপজেলার বীজ উৎপাদন খামারে পৌছাতে একমাত্র সড়ক পথ এটি। সব মিলিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের এহেন বেহাল দশায় ভূক্তভোগীদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
বোয়ালিয়া মোড়ের মুদি দোকানি আমিরুল, রামকৃষ, প্রহ্লাদ সাধু জানান, বছরের পর বছর রাস্তার কাজ না করে ফেলে রাখায় চলাচলের অসুবিধার পাশাপাশি তারা ব্যবসায়ীকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
পুরাইকাঠি গ্রামের মফেজ গাজী বলেন, বোয়ালিয়া মোড় ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটুকু উন্নয়ন কাজে সৃষ্ট সমস্যায় রীতিমত ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্র জানায়, প্রায় ২.৩ কিঃমিঃ দৈর্ঘের সড়কটি নির্মাণের জন্য সরকার ১ কোটি ৯০ লাখ টাকার বরাদ্দ দিয়েছে। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাবলু রহমানের এফটিএ বিবিজেভি জয়েন্ট ভেনসার নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়ে স্থানীয় ঠিকাদার জনৈক মিরাজুল ইসলামকে দিয়ে বাস্তবায়ন করছেন।
এদিকে চলাচলের অনুপযোগী সড়কের নেতিবাচক প্রভাবে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের বীজসহ সারসহ বিভিন্ন উপকরণ ও কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহে মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এর ফলে কৃষিতে বিরুপ প্রভাবের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হারুণ বলেন, ইতোমধ্যে খামারের উপর বেহাল সড়কের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী পাথর, বিটুমিসহ বিভিন্ন উপকরণের অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধির কারণে সঠিক সময়ে সড়কটির কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব হচ্ছে। উপকরণের বাজার দর কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে পৌছালেই রাস্তার কাজ যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান খান জানান, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই