খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমাইশখানা গ্রামে স্কুলছাত্রীকে সিরিজ ধর্ষণের মামলার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও গ্রেপ্তার হয়নি অভিযুক্ত শাহীন। ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীর পরিবারের দিন কাটছে চরম হতাশায়।
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আগামী মাসের ১২ তারিখে তাঁর সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য দিন। এ দিকে হতদরিদ্র পিতা গর্ভকালীন সময়ে মেয়েটির চিকিৎসা এবং পুষ্টিকর খাবার দিতে না পারায় তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই দূর্বল এবং মেয়টি ভীত হয়ে পড়েছে। সন্তানের পিতৃ পরিচয় নিয়েও মেয়েটির পিতা মাতা চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।
ধর্ষনের অভিযোগ ওঠা সৈয়দ মোঃ শাহীনের বয়স ৫০ বছর। পিতার নাম সালেহ আহম্মেদ। আদি বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলায়। ২৫ বছর পূর্বে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ডে স্ত্রীসহ বসবাস শুরু করেন। চাকুরী করতেন সেনহাটী সাগর জুট মিলে। ঐ এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজের অনেক অভিযোগ ছিলো। এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে থাকার কারনে বিভিন্ন সময় অনৈতিক কাজ করেও সে পার পেয়ে যেতো। চলতি বছরের ২ জানুয়ারী থেকে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত ৮ মাসে কিশোরী মেয়েটিকে সে একাধিকবার তাঁর নিজ বাড়ির ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে।
২৯ আগষ্ট ফরমাইশখানা ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হারুন অর রশিদের সহায়তায় মেয়েটির বাবা দিঘলিয়া থানায় হাজির হয়ে সৈয়দ মোঃ শাহীনের বিরুদ্ধ ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১। তাং ১/৯/২০২১।
মামলার অভিযোগে মেয়েটির বাবা উল্লেখ করেন করেন, তার মেয়েটি ছিলো খুবই সহজ সরল প্রকৃতির। শাহীন তাঁর পূর্ব পরিচিত এবং প্রতিবেশী হওয়াই তাঁর মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে এবং লোভ দেখিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নিজ বাড়ির ঘরের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করতো।
মেয়েটির বাবা জানান, ২৯ আগষ্ট তার মেয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফুলবাড়িগেট খানজাহানআলী আলী থানার অন্তর্গত মমতা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা করে জানান মেয়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মেয়েটি স্থানীয় একটি প্রাইমারী স্কুলের ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী। বয়স ১৩ বছর। ঐ সময় মেয়েটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রেখে কিছুদিন চিকিৎসা করানো হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিঘলিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মোঃ ইয়াসিন খুলনা গেজেটকে বলেন, আসামী শাহীনকে গ্রেপ্তারের যাবতীয় কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁর মোবাইলের সিডিআর সংগ্রহ করা হয়েছে। শাহীন খুব ধুরন্ধর প্রকৃতির। পলাতক হওয়ার পর থেকে সে মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা তার নিকটাত্মীয়দের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে আমরা স্থানীয় লোকের সহায়তা নিচ্ছি। আশা করি খুব দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।’
খুলনা গেজেট/ এস আই