যশোরের অভয়নগরে তেজগোল্ড জাতের ধান চাষ করে ধানের পরিবর্তে চিটা হয়ে শতাধিক কৃষক সর্বশান্ত হয়েছে। ১৫০বিঘা জমিতে ৭৮ জন চাষিদের ধানক্ষেতে চিটা হয়ে গেছে। সোমবার (৬ মে) দুপুরে উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দেয়াপাড়া এলাকার মাঠে এই দৃশ্য চোখে পড়ে।
কৃষকরা জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে গ্রামের ৭৮ জন চাষিকে ফ্রিতে তেজগোল্ড জাতের ধান বীজ দেওযা হয়। আমরা সবাই মিলে একযোগে এ ধান চাষ করি ভালো ফলনের আশায়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কঠোর পরিশ্রম করে পেলাম ধানের পরিবর্তে চিটা। উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠকর্মীদের পরামর্শে সরিষার আবাদ শেষে হওয়ার পর আমরা ৭০-৮০ জন তেজগোল্ড ধানের বীজ নিয়ে চাষ করি। ধানের গাছ ও গোছা ভালো হলেও এখন ধান কাটার সময়ে আমরা সব ধান চিটা পাচ্ছি।
ধানচাষি আয়ুব মোল্লা, শহিদুল গাজী, রেজাউল ইসলাম, শাহাজান হোসেন, জাহিদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠকর্মি দেব্রত বাবু ও অন্য মাঠকর্মিদের পরামর্শে আমরা তেজগোল্ড জাতের ধান বীজ নিয়ে চাষ করি। দারিদ্রতার কারনে ধার-দেনা করে ধান চাষে পানি ও সার কীটনাশক ব্যবহার করি। তাছাড়া কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সার দেয় সেগুলোই ব্যবহার করি। ১ বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। পানি ৪ হাজার টাকা, চাষের সময় ২ হাজার ৪শ টাকা, কীটনাশক বালাই নাশক ২ হাজার, কাটার জন্য ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। পরিশেষে ধান কাটার সময় দেখি সব ধান চিটে হয়ে গেছে। আমরা চাষিরা এখন কোথায় কার কাছে যাবো। আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে না খেয়েই জীবন যাপন করতে হবে।
শ্রীধরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, কৃষকের কোন ক্ষতি আমরা কখনো চাই না। মাঠকর্মীদের পরামর্শে যে ঘটনা ঘটেছে এতে কৃষকদের ভাগ্যে চরম বিপর্যয় নামবে। কৃষি কর্মকর্তার কাছে এ ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, দেয়াপাড়া ধান চাষিদের যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই দুঃখ জনক। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় তা করবো। চাষিদের ধানক্ষেতের এই অবস্থার সঠিক তদন্ত করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে