খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২১৮
  বিএনপি কর্মী খুনের মামলায় সাবের হোসেন ৫ দিনের রিমান্ডে
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

ঢাকায় পাঠানো হলো কুয়েট শিক্ষকের লাশ

গেজেট ডেস্ক

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের বিষয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। পরে মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। কুষ্টিয়ায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম। এতে পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এর আগে মৃত্যুর ১৪ দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে থেকে উত্তোলন করা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম এলাকা থেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাতের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। সেখান থেকে মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্তের কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় নানা ভোগান্তির মধ্যে পড়ে উপস্থিত পুলিশ ও নিহত শিক্ষকের স্বজনরা।

মরদেহ উত্তোলনের সময় খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবির কুমার বিশ্বাস, ওসি তদন্ত ও এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা শাহরিয়ার হাসান, কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধি, ড. সেলিম হোসেনের বাবা মো. শুকুর আলিসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন ।

নিহত সেলিম হোসেনের স্বজনরা বলেন, সকালে কবর থেকে সেলিমের মরদেহ তুলে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মর্গে মরদেহ পড়ে থাকলেও ময়নাতদন্ত করা হয়ন। বিকেল পর্যন্ত তারা কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। এখন ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হচ্ছে মরদেহ।

সেলিম হোসেনের চাচা আনোয়ার হোসেন বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা দেখে আসছি গলিত মরদেহ বা দাফনের দুই-তিন মাস পরে কবর গেকে তুলে কুষ্টিয়া হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। তাছাড়া সব সময়ই মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়। কিন্তু পূর্বঘোষণা থাকা স্বত্ত্বেও সেলিমের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হলো না। সারাদিন বসিয়ে রেখে বিকেলে আমাদের জানানো হয় এখানে হবে না, তাদের হাসপাতালে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ নেই। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে যেতে হবে। এটা আমরা আশা করিনি।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা চিকিৎসকরা আমাদের কোনো রকম সহযোগিতা করেননি। সারাদিন আমাদের হয়রানি করা হয়েছে। শুধু আমরা না পুলিশ বাহিনীর লোকরাও হয়রানির শিকার হয়েছেন। আমাদের দাবি এবং চাওয়া ছিল সেলিমের মরদেহের ময়নাতদন্ত সুন্দরভাবে কুষ্টিয়ার মর্গে সম্পন্ন হোক। কিন্তু তা আর হলো না। এতে আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি, আমরা হতাশ। এখন আমাদের কিছু করার নাই আমরা নিরুপায়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য জানান, আমরা এক পোশাকে খুলনা থেকে কুষ্টিয়া এসেছি গতকাল। আজ সকালে কবর থেকে মরদেহ উঠানো হয়েছে। আমরা মরদেহ নিয়ে সারাদিন মর্গে। আমাদের খাওয়া বা গোসলের কোনো ঠিক নেই। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার মর্গে ময়নাতদন্ত হবে না। মরদেহ নিয়ে এখন ঢাকা মেডিকেলের মর্গে যেতে হবে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সারাদিনেও ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেননি। কেউ বলছেন চিকিৎসক ছুটিতে, কেউ বলছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ নেই। ফলে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলেও তারা ময়নাতদন্ত করেননি। তারা সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় তিনি কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে আলোচনা করেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সিভিল সার্জন।

ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্তের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন নিহত কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা তার মরদেহ ও স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি।

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোমেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নেই। এই কারণে ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি। বিস্তারিত সিভিল সার্জন জানেন।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুলনা মহানগর পুলিশের খানজাহান আলী থানা পুলিশকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকায় নিয়ে যাবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, মরদেহ প্রায় গলে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য যে ধরনের এক্সপার্ট অপিনিয়ন দরকার, সে ধরনের এক্সপার্ট অপিনিয়ন এখানে নেই। তাছাড়া ফরেনসিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ সরোয়ার জাহান অসুস্থ হয়ে বাসায় পড়ে আছেন। উনি থাকলে হয়তো ময়নাতদন্ত করা সম্ভব ছিল। কুষ্টিয়া জেলারেল হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে বাকি তিনজন ছিল, কিন্তু তারা পারেননি। এজন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে অস্বাভাবিক হিসেবে চিহ্নিত করায় বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে কুয়েটের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করার জন্য থানায় বিষয়টি জিডিভুক্ত করা হয়েছে।

এই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে খানজাহান আলী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শাহরিয়ার হাসানের ওপর তদন্তের ভার ন্যস্ত করা হয়। যেহেতু সেলিম হোসেনের মরদেহ দাফন হয়ে গেছে তাই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের একটি মাত্র উপায় মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা। এজন্য ওসি তদন্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ময়নাতদন্তের আবেদন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। যে কারণে আদালত মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেননি। আদালত থেকে জানানো হয়, বিষয়টি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের এখতিয়ারভুক্ত। এজন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর খুলনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়। মরদেহ যেহেতু কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়। মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়। ৬ ডিসেম্বর খুলনার জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদারের পাঠানো একটি চিঠি হাতে পান কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনগত দিকগুলো খতিয়ে দেখেন এবং মরদেহ উত্তোলনের ব্যবস্থা করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার খানজাহান আলী থানা থেকে একটি দল কুষ্টিয়া পৌঁছায়। সূর্য অস্ত যাওয়ার কারণে তারা কবরস্থান পর্যন্ত যাননি। পরে বুধবার সকালে মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

গত ৩০ নভেম্বর বিকেল ৩টায় ক্যাম্পাসের পাশে ভাড়া বাসায় মারা যান কুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। ১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মরদেহ দাফন করা হয়।

সম্প্রতি কুয়েটের লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) নির্বাচন নিয়ে ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার অনুগতদের ডাইনিং ম্যানেজার নির্বাচিত করার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন।

ঘটনার দিন ড. সেলিম তার দাফতরিক কক্ষে অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা শুরু করেন। পরে তারা শিক্ষককে অনুসরণ করে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধা ঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য ক্যাম্পাসের কাছে বাসায় যাওয়ার পর ২টায় তার স্ত্রী লক্ষ্য করেন, তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুয়েট বন্ধসহ বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর সাতটি আবাসিক হলে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী হল ছাড়েন।

সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া পাঁচ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!