যশোরের কেশবপুর থেকে বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আটকের প্রতিবাদে আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। যশোর শহরতলীর মুড়লিমোড়ে গাড়ি আড় করে দিয়ে তারা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ওই সময় ব্যস্ত সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে দূর-দূরান্তে যাতায়াতকারী মানুষেরা। পরে আটক শ্রমিকদের মুক্তির আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত পৌনে দশটা পর্যন্ত সড়কে এ অবরোধ চলে। অবরোধে অংশ নেয়া শ্রমিকরা জানান, ছয় দিন আগে যশোর থেকে চুকনগরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া একটি মিনিবাসের এক যাত্রীকে চেতনানাশক খাইয়ে সর্বস্ব লুট করে দুর্বৃত্তরা। অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ওই যাত্রীকে চালক জনি ও সুপারভাইজার সেলিম কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। ওই ঘটনায় কেশবপুর থানায় একটি মামলা হয়। মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।
মঙ্গলবার বিকেলে চালক জনি ও সুপারভাইজার সেলিমকে কেশবপুর থেকে আটক করে পিবিআই। এরপর তাদের কেশবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে শ্রমিকরা থানা ঘেরাও করে। সে সময় পিবিআই কর্মকর্তারা জনি ও সেলিমকে নিয়ে থানার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা যশোর শহরতলীর মুড়লিমোড়ে গাড়ি আড় করে দিয়ে ঢাকা-খুলনা এবং খুলনা-বেনাপোল মহাসড়ক অবরোধ করেন। ওই সময় তারা জনি ও সেলিমের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের কারণে যশোর-খুলনা, মুড়লি থেকে চাঁচড়ার বাইপাস সড়ক ও মুড়লি থেকে মণিহার সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দূর-দূরান্তের যাত্রীরা।
খবর পেয়ে কোতয়ালি থানার ওসিসহ পুলিশের একাধিক টিম মুড়লিমোড়ে যায়। তারা অবরোধ সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা জনি ও সেলিমের মুক্তির দাবিতে অনঢ় থেকে অবরোধ চালিয়ে যান। পরে শ্রমিক নেতাদের সাথে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে নেতাদের আহ্বানে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে যশোর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আটক শ্রমিকদের তদন্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়ায় শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। যানজট হওয়ায় এখন ধীরে ধীরে গাড়িগুলো ছেড়ে যাচ্ছে।