ডুমুরিয়ায় শিরিস গাছের মরা ডালে লেগে থাকা আঠা জাতীয় ব্যাচিস পোকা সংগ্রহে হিড়িক পড়ে গেছে। গত ১ মাস ধরে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মহাধুমধামের সাথে এই পোকা সংগ্রহ কাজ চলছে। কাজকর্ম ও নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামের প্রতিটি নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃন্ধ সহ প্রত্যেক পেশা শ্রেণীর মানুষ মরা শিরিস গাছের ডালে লেগে থাকা এই আঠা জাতীয় ব্যাচিস পোকা সংগ্রহ করছে। দাম পাচ্ছে আশানুরুপ। কিন্তু এই ব্যাচিস পোকা কোথায় যাচ্ছে, সেটা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না।
লোক মুখে শোনা যাচ্ছে একটি চক্র এটি ভারতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভারতে নিয়ে কি করা হচ্ছে, সেটাও কেউ সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছে না। তাছাড়া এ গুলো সংগ্রহ করে বাজারে গিয়ে বিক্রি করার প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রতিদিন ভোর হতে ক্রেতারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে এগুলো কিনে নিচ্ছে। মানুষ কাজের বিকল্প হিসেবে এই কাজে ব্যস্থ সময় পার করছে।
উপজেলার নরনিয়া গ্রামের রওশন আলী মাতার ছেলে ফারুক হোসেন মাতা, লাভলুর রহমান মোড়লের ছেলে আলামিন মোড়ল ও আনোয়ার আলী মাতা ছেলে আসাদুল ইসলাম মাতা বলেন, আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে ডাল থেকে ছাড়ানো আঠা ১৫০-২০০টাকা দরে ক্রয় করছি। আবার গাছের ডাল ক্রয় করে গাছ থেকে সেগুলো নিজেরা ভেঙে নিয়ে আসছি। বৃহস্পতিবার সকালে ৮০০টাকা দিয়ে ১টি, ৩৫০ টাকা দিয়ে ৩টি ও ১০০টাকা দিয়ে ৫টি গাছের ডাল ক্রয় করে সে গুলো নিজেরা ভেঙে নিয়েছি। সারাদিন ক্রয় করে সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে আঠা গুলো পরিষ্কার করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেই। এতে ৩জনের প্রায় ৩/৪হাজার টাকা লাভ হবে।
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আঠা ক্রয় করতে আসা আব্দুল হাই, তার ছেলে ইমদাদুল বিশ্বাস ও এনায়েত সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন সরদার বলেন, আমরা গাছের ডাল ক্রয় করছি। যে গাছের ডালে যেমন আঠা আছে, সে গাছ সেই রকম মূল্যে ক্রয় করছি। নিজেরা গাছে উঠে ডাল ভেঙে এনে বস্তা পুরে রাখছি। ইতিমধ্যে ৩টি গাছের ডাল ক্রয় করেছি। সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে ডাল থেকে আঠা গুলো ছাড়িয়ে বিক্রয় করবো। তারা আরও জানায়, এই আঠা ভারতীয়রা ৭০০-৮০০ টাকা দরে ক্রয় করছে। তবে এই পোকা লাগানো আঠা কি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে তা তারা বলতে পারেনি।
ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দীন বলেন, ভোর হলেই ঈদের আমেজের মত শত শত মানুষ গ্রামে গ্রামে এসে একেবারে উৎসবমুখর পরিরেশে শিরিস গাছের এই আঠা ক্রয় করছে। জানি না তারা এটা কি কাজে ব্যবহার করছে। তবে ছোট ছোট শিশু, বৃদ্ধ, নারী পুরুষ মিলে সামান্য টাকার লোভে যেভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে গাছে উঠে বিশেষ করে মরা গাছে উঠে এই ডাল ও আঠা সংগ্রহ করছে তাতে আমার ভয় হচ্ছে। কখন না জানি বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে যায়।