ডুমুরিয়ায় উত্তরাঞ্চলে বোরো আবাদের লক্ষ্যে ১০টি বিলের ৩ হাজার হেক্টর জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে শুরু হয়েছে সেচ প্রকল্প। চলতি বোরো আবাদ চাষাবাদের লক্ষ্যে গত দেড় সপ্তাহ আগে কৃষকদের উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এতে সেচ মেশিন ও মটর দিয়ে সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।
জানা যায়, বিল খুকশিয়ায় টাইডাল রিভার ম্যানেজম্যান্ট (টিআরএম) বন্ধ হওয়ার ফলে ডুমুরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া হরি-ভদ্রা নদীতে দ্রুত পলি ভরাট হয়ে যায়। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫নং পোল্ডারে ৩টি স্লুইচ গেটের মুখে পলি ভরাট হওয়ায় বিলের পানি নিস্কাশন বন্ধ হয়ে পড়ে। আর এতে ধামালিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নের উত্তরাঞ্চলীয় বিল দহকুলা, বিলসালাতিয়া, বিল তাওয়ালিয়া, বিল কাটেঙ্গা, কেওড়াতলা, বিল সিঙ্গাসহ ১০টি বিলে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রুপ নেয়। ফলে ওই এলাকার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর কৃষি জমি অনাবাদির হুমকিতে পড়ে। গত বছর এলাকার কৃষকরা পতিত জমি চাষাবাদের লক্ষে স্থানীয় কৃষক ও সমাজের বিত্তশীলদের আর্থিক সহায়তায় বিএডিসি থেকে সেচ পাম্প উত্তোলন করে শুরু হয় বরুনা বিল সেচ প্রকল্প। এবারও কৃষকরা বোরো আবাদের লক্ষে একই কায়দায় আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দিনরাত।
এ বিষয়ে কাটেঙ্গা এলাকার ফারুক সরদার, ইমরান মোল্যা, বরুনা এলাকার কৃষ্ণপদ মন্ডলসহ একাধিক কৃষক বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে পানি নিস্কাশনের অভাবে আমরা এসব বিলে ফসল উৎপাদন করতে পারিনি। গত বছর থেকে স্থানীয় কৃষকদের উদ্যোগে ও জন প্রতিনিধিদের অনুদানে সেচের ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে পানি নিস্কাশন হওয়ায় আমরা আবাদ করতে পারছি।
হরি-ভদ্রা পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোঃ মতলেব গোলদার বলেন, শোলগাতিয়া-বরুনা এলাকায় ৬টি গ্রুপ করে সকল কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে সেচ প্রকল্প চালু করা হয়। যে জমিতে মৎস্য চাষ ছাড়া অন্য কোন ফসলাদি হতনা, সেচ প্রকল্প স্থাপনের মধ্য দিয়ে এসব বিলে এখন সোনার ফসল ফলছে।
এ বিষয়ে ধামালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিএম জহুরুল হক বলেন, নির্বাচনে আমার প্রতিশ্রুতি ছিল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের। যেটা বাস্তবায়নে আমি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জামাল ফারুক বলেন, ডুমুরিয়া উপজেলার নিন্মাঞ্চলীয় জলাবদ্ধ ১০টি বিলে বোরো আবাদের উপযোগি করতে আমরা প্রয়োজনীয় সেচ মেশিন ও মটর সরবরাহ করেছি।
তিনি বলেন, কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিএডিসি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট ও মৃত্তিকা’র যৌথ ব্যবস্থাপনায় দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের মাটি ও পানির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদনের পথে। এটি হলে নিম্ন অঞ্চলে কৃষকের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম