খুলনার ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে এক নারী এনজিও কর্মীর টাকার ব্যাগ নিয়ে পালাতে যেয়ে সোমবার দুপুরে জনতার তাড়া খেয়ে পালাতে যাওয়া ছিনতাইকারী তপন হালদার(৫৫) আকষ্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করেছে।
ডুমুরিয়া পুলিশ ও ভক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুমুরিয়া বাজারে সোনালী ব্যাংক থেকে সোমবার দুপুরে ‘ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ’র (এনজিও) কর্মী শিলা মন্ডল সাড়ে ৩৫ হাজার টাকা তুলে ব্যাগে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বাজারের মধ্যদিয়ে হাটছিলেন। পথিমধ্যে পূবালী ব্যাংক মোড়ে পৌছালে এক ছিনতাইকারী হঠাৎ তার কাছ থেকে টাকার ব্যাগটি নিয়ে দৌড়ে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়ক পেরিয়ে আরাজী ডুমুরিয়া গ্রামের দিকে পালিয়ে যায়। ওই সময় শিলা মন্ডল দৌড়ে মোড়ে পৌছে এক মোটর সাইকেল চালককে অনুরোধ করে দ্রুত ছিনতাইকারীর পিছু নিয়ে আরাজী ডুমুরিয়া-মির্জাপুর মোড় পর্যন্ত খুঁজতে থাকেন। এক সময় ওই ছিনতাইকারীকে ব্যাগ নিয়ে হাটতে দেখে তার পিচু নেন। কিন্তু কিছু সময় ধরে খোঁজার পরও ছিনতাইকারীকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ওই ঘটনার ঘন্টাখানেক পর ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ‘ছিনতাইকারীর সন্ধান মিলেছে’ এমন খবর পেয়ে ভুক্তভোগী শিলা মন্ডল আবারও আরাজী ডুমুরিয়া গ্রামে যান এবং সোহরাব গাজীর বাড়ির কাছে পৌছে ছিনতাইকারী তপন হালদার-কে অচেতন অবস্থায় মুখদিয়ে ফ্যানা বের হতে দ্যাখেন। তখন খবর পেয়ে ডুমুরিয়া পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছিনতাইকারীকে তুলে নিয়ে ডুমুরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তপনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনা চলাকালে ডুমুরিয়া মোড় থেকে এলাকাবাসী ছিনতাইকারী চক্রের অপর সদস্য আলতাপ হোসেন(৪৩)কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। উল্লেখ, মৃত তপনের দেহ থেকে ছিনতাই হওয়া সাড়ে ৩৫ হাজার টাকাও উদ্ধার হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী শিলা মন্ডল বলেন, সোনালী ব্যাংক থেকে ৩৫ হাজার ৫’শ টাকা তুলে যাওয়ার সময় ফল মার্কেট এলাকায় আমার কাছ থেকে হঠাৎ ব্যাগটা টান মেরে নিয়ে পালায়। অনেক খোঁজা-খুঁজি শেষে আরাজী ডুমুরিয়া গ্রাম থেকে ছিনতাইকারী তপন হালদারকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আর তার কাছ থেকে আমার খোয়া যাওয়া টাকাও উদ্ধার হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ডুমুরিয়া ইউপি মেম্বর লুৎফর রহমান মোড়ল বলেন, আমরা ওই মহিলার অনুরোধে ছিনতাইকারীকে ধরতে চেষ্টা করতে থাকি। এক পর্যায় সোহরাব মোড়লের বাড়ির বাথরুমের মধ্যথেকে মৃত অবস্থায় ছিনতাইকারীকে উদ্ধার করেছি।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেখ কনি মিয়া বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ওরা ৪ জনের একটা ছিনতাইকারী চক্র। জনতার তাড়া খেয়ে পালানোর সময় দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া এলাকার নলিনী হালদারের ছেলে (ছিনতাইকারী) তপন হালদার আকষ্মিকভাবে মারা গেছে। তার পরিবারিক সুত্রে জানা গেছে, তপন হার্টের রোগী ছিলো। এ ঘটনায় শিলা মন্ডলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই