খুলনা নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে জেলা পরিষদের নির্মাণাধীন মার্কেটে গত ১০ দিন ধরে ঝুলছে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) তালা। কেসিসিকে না জানিয়ে তাদের জমিতে দোকান নির্মাণ হচ্ছে-এই অভিযোগ তুলে নির্মাণাধীন স্থাপনা সরিয়ে নিতে গত ২২ নভেম্বর জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়েছে কেসিসি।
অন্যদিকে ২৩ নভেম্বর কেসিসিকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জেলা পরিষদ বলছে, ওই জমির সম্পূর্ণ মালিকানা তাদের। ওই স্থানে কেসিসির কোনো জমি নেই। ১০ দিনেও বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় এখনও তালা ঝুলছে সেখানে। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগর ভবনে কেসিসির অংশের দোকান মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। ওই বৈঠকে তাদের রাজস্ব কেসিসিতে প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতোদিন সব ব্যবসায়ীই জেলা পরিষদকে রাজস্ব দিয়ে আসছিল।
ডাকবাংলো মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পুরাতন ডাকবাংলো ভবনের ফাঁকা জায়গায় প্রবেশ ফটকে তালা ঝুলছে। ভেতরে দোকান ঘর নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ৮/১০ দিন আগে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কেসিসির লোকজন সেখানে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে গেছে।
তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর গত ২২ নভেম্বর কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম চিঠি দিয়ে নির্মাণাধীন স্থাপনাগুলো অপসারণের অনুরোধ জানান। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ডাকবাংলোর মোড়ে কেসিসির দশমিক ১৮ একর জমির উত্তর পার্শ্বের ফাঁকা জায়গায় বিনা অনুমতিতে নতুন দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন নতুন স্থাপনা জরুরীভিত্তিতে অপসারণ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
এর প্রেক্ষিতে ২৩ নভেম্বর কেসিসির প্রধান নির্বাহীকে চিঠি দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ডাকবাংলোর মোড়ে খুলনা জেলা পরিষদের মালিকানাধীন মোট ৫০ দশমিক ৪০ শতক জমি আছে। জমি সিএস, এসএ এবং আরএস খতিয়ানের মাধ্যমে মালিক খুলনা জেলা পরিষদ। বর্তমানে কেসিসির ওই জমির কোনো মালিকানা স্বত্ত্ব নেই।’
এ ব্যাপারে কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ওই জমির রেকর্ড ভুল হয়েছিলো। পরে তা সংশোধনের জন্য মামলা চলছে। এটি নিয়ে আগেও জটিলতা হয়েছিলো। তখন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দুই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে বসে সমাধান করা হয়। ওই সময়ও কেসিসির দশমিক ১৮ শতক এবং বাকি জমির মালিকানা জেলা পরিষদের বলে বর্তমান চেয়ারম্যানসহ সবাই মেনে নেন। এখন জমির মালিকানা নিয়ে যা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। কেসিসির জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, এখানে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আমি ও মেয়র কাগজপত্র নিয়ে বসে দ্রুত সমস্যার সমাধান করবো।
খুলনা গেজেট/ টি আই