ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমি দান না করেও প্রধান শিক্ষিকার আশীর্বাদে দাতা সদস্য হলেন জীবন কুমার ঘোষ। এতে এলাকা জুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রকৃত জমিদানকারী পরিবারের উত্তরসূরী রবিউল ইসলাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এস.এ.দাগ নং-৬১১, এস.এ খতিয়ান নং ১২০, বেজপাড়া মৌজার জমি দান করেন। কিন্তু তাদের পরিবারের কাউকে কখনোই দাতা সদস্য হিসাবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। বরং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু নগদ অর্থের বিনিময়ে জীবন কুমার ঘোষকে বারবার দাতা সদস্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করে সভাপতি নির্বাচিত করে থাকেন। কিন্তু আদৌ জীবন কুমার ঘোষের কোন জমি ওই বিদ্যালয়ে নেই বা দানও করেননি। ২০১১ সালে গঠিত ম্যানেজিং কমিটিতে জীবন কুমার ঘোষকে দাতা সদস্য করে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ২০১৪ সালে ম্যানেজিং কমিটিতে আবারও তাকে দাতা সদস্য করে সভাপতি করেন। সর্বশেষ ২০২১ সালের ম্যানেজিং কমিটিতে জীবন কুমার ঘোষকে অবৈধ ভাবে দাতা সদস্য করা হয়।
প্রধান শিক্ষক জীবন কুমার ঘোষকে সভাপতি নির্বাচিত করে তারা যোগসাজশে সরকারি অর্থ তছরুপ করেন। এর সাথে সহযোগিতা করেন সহকারী শিক্ষক সেলিম উদ্দিন। বিদ্যালয়ে প্রতি বছরে সরকারি অনুদান স্লিপ ,ক্ষুদ্র মেরামত, রুটিন মেইনটেইন্স ও প্রাক-প্রাথমিকের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়, কিন্তু অবৈধ দাতা সদস্য ও সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষিকা সরকারি অর্থের কাজ না করে টাকা ভাগাভাগি করে নেন। একারণেই প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা বার বার অবৈধ ভাবে জীবন কুমার ঘোষকে দাতা সদস্য করে থাকেন। রবিউল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন, এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানুর নিকট অভিযোগ দিলেও তিনি কোন প্রতিকার পাননি বরং দুর্ব্যবহার করে ক্ষমতার দাপট দেখান। প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহা একই বিদ্যালয়ে প্রায় ২৯ বছর চাকরি করার সুবাদে তিনি আধিপত্য বিস্তার করেছেন। এ কারণে তিনি সাধারণ অভিভাবকদের সাথে প্রতিনিয়ত দুর্ব্যবহার করে থাকেন। সময়মত বিদ্যালয়ে হাজির হন না এবং সময়ের আগেই স্কুল ছুটি দিয়ে দেন।
লিখিত অভিযোগে আরো উলেখ করেন, দূর্নীতিবাজ শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু এবং প্রধান শিক্ষক শিপ্রা রাণী সাহাকে বহিষ্কার করে বিভাগীয় মামলা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা রাণী সাহা বলেন, আমার কাছে যে কাগজপত্র দিয়েছিলো তাই দেখে আমি তাকে দাতা সদস্য ও সভাপতি বানানো হয়েছে। দাগ ও খতিয়ান নম্বর জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু বলেন, আমি আমার জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা না বলে কিছু বলতে পারছিনা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে এই বিষয়ে তিনি বলেন, জমি না থাকলে কাউকে দাতা সদস্য বানানো যাবেনা । এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছি তারা আমাদেরকে জানালে আমরা তদন্ত করে দেখবো। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই