যশোরের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের ছয় লেনের সেতু নির্মাণের নকশা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে। এই নকশায় সেতু নির্মাণ হলে নদের নাব্যতা হ্রাস ও নৌ চলাচল বিঘিœত হবে। নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও নৌ চলাচলের উপযোগী করাসহ ৮ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে যশোরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দিয়েছেন কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে সংগঠনের আহবায়ক অনিল বিশ্বাস বলেছেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ) কর্তৃক সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে ঝিকরগাছা বাজারে কপোতাক্ষ নদের উপর নিম্নমানের নিচু সেতুর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে নদের নাব্যতা হ্রাস ও নৌ-চলাচল বিঘিœত হবে। এ সমস্যা সমাধানে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
দাবিগুলো হলো, নীতিমালা লঙ্ঘন করে সেতুর নির্মিত অংশ নাব্যতা ও নৌ-পরিবহণের উপযোগী করে পুনর্গঠন করতে হবে ও বাকি অনির্মিত অংশটি সেভাবেই নীতিমালা অনুযায়ী নির্মাণ করতে হবে। নীতিমালা লঙ্ঘনের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচার ও পুন:নির্মাণের দায় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। দেশের ৮০৫টি ব্রিজ নির্মাণে নীতিমালা লঙ্ঘন অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির সাথে সংশ্লিষ্টদের বিচার করতে হবে। কপোতাক্ষ নদ সংস্কার ও নৌ-পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজনে নদের উপর নির্মিত নীতিমালা পরিপন্থী অন্যান্য ব্রিজ-কালভার্ট অপসারণ ও পুন:নির্মাণ করতে হবে। চলমান নদ সংস্কারের কাজ শুরু করার আগেই ডিজাইন অর্থাৎ প্রি-ওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক জনসম্মুখে ঘোষণা করতে হবে। নদীতট নীতিমালা মেনে নদ সংস্কারে খননকৃত মাটি পাড়ের বাইরে রাখতে হবে। অবিলম্বে পাখিমারা বিলে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, জমি-জোতের মালিকদের বকেয়া ক্ষতিপূরণ প্রদান করে মোহনা সচল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে এবং উজানে নদী সংযোগের কাজ যুগপৎ সম্পন্ন করতে হবে। সংস্কার কাজ তদারকিতে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনকে সংশ্লিষ্ট করতে হবে।
কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক অনিল বিশ্বাস বলেন, নদীকে নৌ চলাচলের উপযোগী ও নাব্যতা রক্ষায় সকল বাঁধা, স্থাপনা, নিচু ব্রিজ অপসারণ করতে হবে। সে লক্ষ্যে সরকার ৮০৫টি ব্রিজ অপসারণ ও পুননির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে সরকার যখন ঘোষণা করেছে, ঠিক সে সময়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু নির্মাণে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে নৌ-চলাচলে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে গত ২৯ জুলাই বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা সরেজমিনে সাইট পরিদর্শন করে আপত্তি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সে আপত্তিতে কর্ণপাত করছে না। ব্রিজের একাংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বাকি অংশ নীতিমালা অনুযায়ী করার সুযোগ রয়েছে। অপর অংশটি নীতিমালা মেনে পুনঃনির্মাণ করার দাবি জানানো হয়েচে স্মারকলিপিতে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, কেশবপুরের আহবায়ক অ্যাড. আবু বক্কার সিদ্দিক, সদস্য অ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু, ঝিকরগাছার আহবায়ক আব্দুর রহিম, সদস্য সচিব মাস্টার আশরাফুজ্জামান বাবু, ঝিকরগাছার সদস্য সুভাষ চন্দ্র ভক্ত ও বিমল কুমার ঘোষ প্রমুখ।