৩৭ বছর শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে আজ জীবন সায়াহ্নে অর্থ কষ্টে অসুস্থ হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন সাবেক প্রধান শিক্ষক শিব পদ বিশ্বাস। তিনি ২০০২ সালে অবসরে যান কিন্তু আজ পাননি কোন অবসর ভাতার অর্থ।
জানা যায়, অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শিবপদ বিশ্বাস দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভূগছেন। তিনি পঙ্গু হয়ে বাড়িতে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছেন। ২০০২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু বিধি বাম তিনি আজও পাননি কোন অবসর ভাতার টাকা। আজ তার নেই টাকা, নেই আত্মীয় স্বজন। দেখার কেউ নেই, করছেন একাকীত্ব জীবন যাপন। ছেলে নেই, স্ত্রী মারা গেছেন দেড় বছর আগে। দুই মেয়ে-জামাই ভারতে থাকেন।
সাবেক এই প্রধান শিক্ষক বলেন, মেয়েরা মাঝে মধ্যে মোবাইলে খোঁজ-খবর নিলেও কোন আর্থিক সাহায্য পাঠায় না। অথচ এই মেয়ে-জামাইয়ের লেখা-পড়ার খরচ তিনি দিয়েছেন। এমনকি তিনি তাদের প্রতিষ্ঠিত করতে নিজের জমি-জমা ও গচ্ছিত টাকা দিয়েছেন। সব ছিল এক সময়, কিন্তু আজ তার দুরাবস্থায় কিছুই নেই। বর্তমানে তিনি ডায়াবেটিস ও হাইপ্রেসারসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। দৈনিক প্রায় ৩শ’ টাকার ওষুধ প্রয়োজন হয়, আর সেই অর্থের তেমন কোন উৎসও নাই। অভাব-অনটন তাকে আষ্টেপৃষ্টে ধরেছে। রান্না-বাড়া করার মত তার কেউ নেই। সামান্য টাকার বিনিময়ে পাশের বাড়ির সরস্বতী বিশ্বাস রান্না করে দিয়ে যান। প্রতিবেশি ভাইপো নৃপেন ও তাঁর স্ত্রী মাঝে মাঝে দেখা-শুনা করেন।
সরেজমিনে তাকে দেখতে মণিরামপুর উপজেলার ভুলবাড়িয়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, তিনি একটি খাটের উপর সারাক্ষণ বসে থাকেন। তাকে দেখতে গেলে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে কুলটিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। ঐ স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক কমলেশ সরকার তার সার্বিক বিষয়ে সব সময় খোঁজ খবর রাখেন বলে তিনি জানান।
তাকে আরও কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখার জন্য দিন-রাত যিনি কষ্ট করে যাচ্ছেন তিনি হলেন ঐ স্কুলের সাবেক ছাত্রী, সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক অনিতা বিশ্বাস। সাবেক এই প্রধান শিক্ষককে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য ০১৭১৫৪৫২৪৭৯ এই বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন ওই স্কুলের কৃতি ছাত্রীবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি