খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২১৮
  বিএনপি কর্মী খুনের মামলায় সাবের হোসেন ৫ দিনের রিমান্ডে
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

জাওয়াদের প্রভাবে ডুমুরিয়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি, জনদূর্ভোগ চরমে

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া

জাওয়াদের প্রভাবে গত কয়েকদিনের নিম্নচাপে ডুমুরিয়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । বৃষ্টির কারণে উপজেলার বেশির ভাগ আমন ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে সবজি ক্ষেত।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ১৫ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮হাজার ১২৫ মেট্রিক টন। কিন্তু এই অসময়ে বৃষ্টির কারণে ৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ধান এখনও মাঠে রয়েছে। বোরো মৌসুমে ১৩০ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়েছিল। তার মধ্যে ৫হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়েছে। ১৩০হেক্টর জমির সরিষার মধ্যে ৬হেক্টর ও ২হাজার ৫হেক্টর জমির সবজির মধ্যে ১০হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলার চুকনগর বিল, কুড়ির বিল, মালতিয়ার বিল,কুলবাড়িয়ার বিলসহ কয়েকটি বিলে গিয়ে দেখা গেছে অনেকের ক্ষেতের ধান কাটা অবস্থায় পানির উপর ভাসছে। অনেকের পাকা ও আধা পাকা ধানের উপর এক থেকে দেড় হাত পানি উঠে গেছে।

অতি ঘনিভুত এই ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শনিবার রাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। রোববার সকাল থেকে অবিরাম ধারায় বৃষ্টিপাত চলতে থাকে। যা বিকেল নাগাদ ভারী বর্ষণে রূপ নেয়। সোমবার রাত পর্যন্ত বিরামহীনভাবে বৃষ্টি হতে থাকে। অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাতে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের সড়ক গুলো কাদা-পানি জমে যানচলাচল ও জনসাধারনের স্বাভাবিক চলাচলে দারুন বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

গত ৩দিনে সূর্যের আলো দেখা মেলেনি। শীতের তীব্রতাও বেড়ে গেছে। শীতের এই মৌসুমে টানা বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেতের আমন ধান বিনষ্ট হবার আশংকা করছেন কৃষকেরা। তাছাড়া শীত মৌসুমে সবজি ও শস্য উৎপাদনের অন্যতম ভান্ডার হিসেবে খ্যাত ডুমুরিয়া উপজেলার চাষীরা ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশংকা করছেন।

উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ভবদহ জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ অতিবৃষ্টিতে বেশি ভোগান্তির শিকার হবে বলে ওই এলাকার কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভোগান্তির শিকার হবে বলে আশঙ্কা করছেন।

ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাব উপকূলবর্তী এলাকা ছাড়িয়ে এই জনপদে আঘাত আনতে পারে এমন আশংকায় আবহাওয়া দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্যে বিশেষ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় উপজেলার সার্বিকভাবে জনজীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে। এ ব্যাপারে কৃষক আব্দুল হাই, ইদ্রিস আলী, আব্দুল মালেক গাজী, মাসুদ সরদার বলেন, মাছ চাষের পাশাপাশি মৎস্য ঘেরের আইলে সিম চাষ করেছিলাম। ফলনও ভাল হয়েছে। কিন্তু অবিরাম বৃষ্টির কারণে গাছ অধিকাংশ সিম গাছ হেলে পড়েছে। সিমও নষ্ট হয়েছে প্রচুর।

কৃষক রফিকুল ইসলাম গাজী, হেলাল হোসেন, হাফিজুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সব নষ্ট হয়ে গেছে। অধিকাংশ কৃষকদের অভিযোগ পানি সরবরাহের ভাল ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই এভাবে এলাকা তলিয়ে যায় ফসলের ক্ষেত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, দ্রুত বৃষ্টির পানি কমে গেলে ধানের খুব বেশি ক্ষতি হবে না। তবে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করব।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!