একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের জন্য দলের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, এর আগে ২০১৪ সালে মনোনয়ন না পেয়ে হন স্বতন্ত্র প্রার্থী। কিন্তু ভাগ্য দেবী সহায় হননি। ফলে অনেকটাই হতাশ ছিলেন। তবে দলের কাজে সরব ছিলেন। তার পুরস্কারও দিয়েছে দল। এবার আবার খুলনা-১ আসনে হয়েছেন নৌকার মাঝি। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল। বলেছেন, নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ২০ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে সাবেক সাংসদ ননীগোপাল মণ্ডল জয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বনদ্বী প্রার্থী ছিলেন বিএনপির আমীর এজাজ খান, পেয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৪০২ ভোট। তবে ২০১৪ সালের নির্বাচনে ননীগোপালের স্বপ্ন আবারও ভঙ্গ হয়ে যায়। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে সেবার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করলেও ভোট পেয়েছিলেন ৩৪ হাজার ৫২৭টি। দলীয় প্রার্থী পঞ্চানন বিশ্বাস মোট ৬৬ হাজার ৯০৪ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। বিএনপি জোটের কেউ নির্বাচনে না থাকায় রক্ষা পেয়ে যায় আসনটি। সেবার ননীগোপাল মণ্ডলকে দলীয় পদও হারাতে হয়। এরপর ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্থানীয় রাজনীতির দ্বন্দ্বে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন সাবেক এই নেতার। তবে দলের হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় পঞ্চানন বিশ্বাস আবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একাদশ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে আবার দলে জায়গা করে নেন সাবেক সাংসদ ননীগোপাল।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বেশ আগেই গণসংযোগ শুরু করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। ইতিপূর্বে তিনি কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নে ছয়বার ইউপি চেয়ারম্যান, একবার দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। একেবারে তৃণমূল থেকে কাজ করা এই সাবেক এমপি অবহেলিত দাকোপ-বটিয়াঘাটায় রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, উপকূলের ভেড়িবাঁধ নির্মাণ, সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণসহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেন।
নির্বাচনী ওই এলাকাটি হিন্দুসম্প্রদায়-অধ্যুষিত থাকায় বরাবরই আসনটি আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, খুলনার অপর পাঁচটি আসন সময়ে সময়ে বিভিন্ন হাতে পড়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকেই খুলনা-১ নিরাপদ আ’লীগের জন্য। গত ছয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর জয় হয়। ফলে দলীয় মনোনয়ন পেতে এবারও কয়েকজন নেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
স্থানীয়রা বলছেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে ওই নির্বাচনী এলাকাটিতে উন্নয়ন হয়েছে সাবেক এমপি ননীগোপাল মণ্ডলের সময়ে। এর আগে এবং পরে দৃশ্যমান আর কেউ এতো উন্নয়ন করতে পারেনি। এমন কি বর্তমান সাংসদ আ’লীগ সরকারের সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা তিনি এ এলাকায় করতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানতে চাইলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ননীগোপাল মণ্ডল বলেন, জনগণের চাহিদা মতো ও পরিকল্পনা অনুসারে পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করে যাবো। এজন্য তিনি জনগণের কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে আবারও শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার (২৬ নভেম্বর) দলীয় প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও দক্ষিণাঞ্চলের রাজনৈতিক অভিভাবক শেখ হেলাল ও শেখ জুয়েলসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা অবহেলিত নির্বাচনী এই এলাকার দলীয় মনোনয়নে মনোনীত করায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেডি