দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যেই মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এ ছাত্র সংগঠনটি। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নেতৃত্বেই ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়।
১৯৪৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল হিসেবে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটে, যা পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে এ দেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতাসংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়। এ প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেয় ছাত্রলীগ। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, ৫৪-এর সাধারণ নির্বাচনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ পরিশ্রমে যুক্তফ্রন্টের বিজয় নিশ্চিত, ৫৮-এর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ৬৬-এর ৬ দফা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া, ছয় দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাকশাসককে পদত্যাগে বাধ্য করা এবং বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা, ৭০-এর নির্বাচনে ছাত্রলীগের অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ, স্বাধীনতাপরবর্তী সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অসামান্য অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে সাতটায় ধানমন্ডিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ ও ‘ভোট উৎসবের জন্য’, ‘নৌকার জন্য’ স্লোগানে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সুবিধাজনক সময়ে ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনী আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথ মর্যাদায় পালন করতে ইউনিটের (জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ) নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।