যশোরের চৌগাছায় চাঞ্চল্যকর পিকুল হত্যাকান্ড নিয়ে নিহতের স্ত্রীর একটি ভিডিও ক্লিপ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। হত্যাকান্ডের পর সন্দহের তীর ছিল পরিবারের দিকে, সেটি অনেটাই পরিস্কার করেছেন তার স্ত্রী এমনটিই বলছেন এলাকাবাসি।
২০২০ সালের ৮ নভেম্বর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়ারপাড়ায় নির্মম ভাবে খুন হয় দিনমজুর পিকুল হোসেন। চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনায় নানা জল্পনা কল্পনার পর অবশেষে নিহতের স্ত্রী মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তিনি স্পষ্টতই তথ্য দিয়েছেন একটি ভিডিও ক্লিপে। তিনি এটিও বলেছেন মামলার আসামীরা কেউ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয়। সম্প্রতি ওই ভিডিও ক্লিপটি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও বক্তব্যে নিহত পিকুলের স্ত্রী জুলেখা বলেন, তার স্বামীর প্রকৃত খুনি তারই আপন ভাই মুকুল হোসেন। জমাজমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণেই আপন ভাই আমার স্বামীকে হত্যা করে। এই হত্যার সাথে শ্বশুর জড়িত না থাকলেও তিনি সবই জানতেন। আসলে এক সাথে তিনি দুই ছেলেকে হারাতে চাননি। তাই নিজের ছেলে মুকুলের নামে মামলা করেননি। তিনি বলেন, স্ত্রী হিসেবে আমার অধিকার রয়েছে, আমার স্বামী হত্যা মামলার বাদী আমি নিজেই হব। কিন্তু সেটা আমাকে হতে দেয়া হয়নি। পিকুল নেই মুকুলও হাত ছাড়া হওয়ার ভয়ে তিনি সত্য গোপন করছেন।
তিনি আরো বলেন, সত্য উদঘাটনের ভয়ে তাকে ও সন্তানদের স্বামীর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসব কথা তিনি ভিডিও করে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে পাঠিয়েছেন।
ভিডিও ক্লিপটি পাওয়ার পর গত ১৫ই আগস্ট দুপুরে নিহতের স্ত্রী জুলেখার বাবার বাড়িতে কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে। এ সময় তিনি বলেন, দুই সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি। তবুও স্বামীর প্রকৃত খুনিদের বিচার হোক এমনটাই চাই।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর পিকুল হোসেন হত্যার শিকার হন। ঘটনার দিন রবিবার সকালে বাবার দেয়া ১৮ কাঠা পাকা ধান কাটতে মাঠে যায় পিকুল। অর্ধেক পরিমানে ধান কেটে দুপুরে পিকুল বাড়িতে ভাত খেতে আসে। আবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল বেলায় মাঠে বাকি ধান কাটতে যায়। তারপর পিকুল আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। রাত আনুমানিক নয়টার দিকে খোঁজ করতে গিয়ে পিকুলের বাবা সাকোয়াতসহ কয়েকজন ধান দিয়ে ঢাকা অবস্থায় পিকুলের লাশ দেখতে পায়। তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে এলোপাতাড়ি দা, কাচির কোপের আঘাতে রক্তাত্ব অবস্থায় পিকুলকে পড়ে থাকতে দেখে। কেউ কিছু বুঝে না উঠতেই পিকুলের বাবা সাখাওয়াত একই গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, চা বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম ও তার ভাই সে সময়ে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরিফুল ইসলামের উপর পুত্র হত্যার দায় চাপান। আটক হয় আসামীরা, দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর বর্তমানে গ্রেপ্তারকৃত সকলেই এখন জামিনে আছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই