সাতক্ষীরার কলারোয়ার এক মহানায়কের প্রস্থান হলো। শায়িত হলেন চির নিদ্রায়। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। হাজারো মানুষ দিলেন শেষ বিদায়। আলহাজ বিএম নজররুল ইসলাম। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) সকালে জানাজা নামাজ শেষে কলারোয়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে প্রয়াতের বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে সকাল ৮টায় কলারোয়া পাইলট হাইস্কুল ফুটবল মাঠে জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয় বিএম নজরুল ইসলামের মরদেহ। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
পরে সেখান জানাজাপূর্ব আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, প্রয়াতের একমাত্র ছেলে বিএম রবিউল ইসলাম রিপন, শ্যালক আলহাজ আব্দুর রহিম, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক এমপি একেএম ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, কলারোয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ এমএ ফারুক, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, পৌর মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তাফা, কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার প্রমুখ। আলোচনাপর্ব সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলিমুর রহমান ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল আলম মল্লিক।
স্মরণকালের বৃহৎ এই জানাজায় নানান বয়সী ও পেশার অসংখ্য মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। জানাজা নামাজে ইমামতি করেন কলারোয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলহাজ মাওলানা আব্দুল বারী। এর আগে প্রয়াতের খাটিয়ায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে মরহুমের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সদ্যপ্রয়াত বিএম নজরুল ইসলাম ছিলেন ওই মসজিদের সভাপতি।
কলারোয়ার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বিএম নজররুল ইসলাম। ‘নজরুল সাহেব’ নামেই যিনি বেশি পরিচিত ছিলেন। রাজনীতির গন্ডি পেরিয়ে তিনি ছিলেন দলমতনির্বিশেষে সর্বজনবিদিত ব্যক্তিত্ব। ছিলেন এ অঞ্চলের স্বচ্ছ ও সুস্থ ধারার রাজনীতির পুরোধা। আপমর সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভরসার এই সজ্জন মানুষটি বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বিএম নজরুল ইসলাম ছিলেন সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সাবেক আহবায়ক ও বর্তমান সহ.সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। একই সাথে বহু সামাজিক, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিলো তার হাতের ছোঁয়া ও সম্পৃক্ততা। তার মৃত্যুতে কলারোয়ার আস্থাভাজন আরো এক অভিভাবকের অবসান হলো।
খুলনা গেজেট/ এস আই