খুলনার কয়রায় সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজে ধীরগতি হওয়ায় সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ের থেকে দেড় বছর বেশী সময় অতিবাহিত হলেও সম্পন্ন হয়েছে ৩০ শতাংশ কাজ। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে একাধিকবার নোটিশ করা হলেও কর্ণপাত করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছে বলে দাবি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের।
কয়রা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কয়রার আরএনডিএস দেয়াড়া (হারুণ গাজীর মোড়) থেকে রোনবাগ ইউজেডআর পর্যন্ত ১২৭০ মিটার এবং আমাদী ইউনিয়নের খিরোল বিসি থেকে বেজপাড়া বিসি রোড পর্যন্ত ৮৮৩ মিটার সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬২৭ টাকা । ২০২১ সালের ২৩ মে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের কথা থাকলেও দেয়াড়া সড়কে মাত্র ৩০ শতাংশ ও খিরোল সড়কে ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কেডিআরআইডিপি প্রকল্পের কাজটির দায়িত্ব পায় মেসার্স এ সামাদ ট্রেডার্স।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল গাজী বলেন, এর থেকে আগের ইটের সলিং ভালো ছিল। খোয়া ও বালির মধ্যদিয়ে যাতায়াত করা অনেক কষ্টকর। কোন ভ্যান চলাচল করে না। ধান কেটে মাথায় নিয়ে বাড়ি আনতে হচ্ছে।
আরশাদ গাজী বলেন, ভেকু দিয়ে কেটে বালু দেইনি। প্রায় এক বছর এভাবে ফেলানো থাকে। এখন কিছু বালি ও খোয়া দেয়া হয়েছে। তবে সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে পায়ে হেটে চলাচলের পরিবেশ থাকে না।
আরেক বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, মাঝে মধ্যে ঠিকাদারের লোক এসে নামমাত্র ২/৩ দিন কাজ করে চলে যায়। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
হযরত আলী গাইন বলেন, আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। চারটি বছর কষ্টে রয়েছি।
ভ্যান চালক আব্দুল মালেক বলেন,খানা খন্দে ভরা। বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। রাস্তা দিয়ে ভ্যান চালানো যায় না। টায়ার টিউব নষ্ট হয়ে যায়।
কাজের ঠিকাদার অহিদুজ্জামান বাবু বলেন, কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে কাজটিতে আমার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আমার খুব কাছে মানুষ। এজন্য ক্ষতি হলেও কাজটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি।
মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুদ বলেন, কন্ট্রাকটার টেন্ডার প্রক্রিয়ার পরে ওয়ার্ক অডার পেয়ে কাজ করতে দেরি করেছে। রাস্তাটি ছয় বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকায় জনগণ ভোগান্তিতে আছে। কন্টাকটারা রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের থেকে শক্তিশালী। দ্রুত সম্ভব রাস্তাটির কাজ শেষ হলে জনগণের ভোগান্তি কমবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন,আমি যোগদানের আগেই কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। দুটি সড়কেই সাববেজের কাজ করেছিল। সেটা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওয়াস আউট হয়ে যায়। ফলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজে গড়িমাসি করে। বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে। তবে আমরা চিঠি দেওয়ার পরে ফের কাজ শুরু করেছে। দেয়াড়ায় ফের সাববেজের কাজ করতেছে। আর খিরোলেরটি ডাব্লিউ বিএমএর কাজ শেষ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বাড়েনি। কাজের মেয়াদ বাড়তেও পারে আবার নাও বাড়তে পারে। যদি কাজের মেয়াদ না বাড়ে তাহলে বিধি মোতাবেক মেয়াদোত্তীর্ণ সময়ের বিল কর্তন করা হবে।
খুলনা গেজেট/এসজেড