খুলনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মো. এনায়েত হোসেনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তার বড় ছেলে মিরাজুল ইসলাম ও সেজ ছেলে রফিকুল ইসলাম পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মিরাজুল ইসলাম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডেএমপি) ও রফিকুল ইসলাম মেহেরপুর জেলা পুলিশে কর্মরত রয়েছেন।
সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মহানগরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পালপাড়া পল্লীতীর্থ সরকারি বিদ্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়িতে থাকা মুক্তিযোদ্ধার দুই পূত্রবধূকে মারধর ও নির্যাতন করে ডাকাতরা। মুখোশধারী ডাকাতদলের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, ঘরে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে।
মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেনের বড় মেয়ে মার্জিয়া বলেন, আমি ঢাকায় থাকি। বাপের বাড়ি বেড়াতে এসেছি। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমাদের টিনশেড বাড়ির উত্তর পাশের দরজা বাইর থেকে ভেঙে ঘরে ঢুকে ডাকাত দল। আমার মেজ ভাই সিরাজুল ইসলাম মোবাইলে নেট ব্রাউজ করছিল। ডাকাত দেখে মোবাইলের টর্চ জ্বালালে ওর ফোন নিয়ে মুখ চেপে ধরে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় ঘরের ভেতর ১২ জন ডাকাত ঢুকে। বাইরে আরও দুই থেকে চারজন ছিল। সবার হাতে ছুরি ও স্ক্রু ড্রাইভার ছিল। একজনের হাতে বটি ছিল। এছাড়া সবার কোমরে কিছু গোজাছিল সেটা কী বলতে পারবো না। ডাকাতরা সবাইকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখায় এবং পুরো ঘর তছনছ করে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, সেজ ভাই নতুন বিয়ে করেছে। ওর স্ত্রী জাকিয়া ইসলাম মীমের কাছে ডাকাতরা তার গয়না চেয়েছে কিন্তু দিতে না পারায় ওকে মারধর করেছে। মেজ ভাই সিরাজুলের গর্ভবতী স্ত্রীকেও মেরেছে ডাকাতরা। মেজ ভাই সিরাজুলের গলায় ছুরি ধরে বলে সবকিছু না দিলে ওকে মেরে ফেলবে। পরে সবার কাছে থাকা স্বর্ণের চেন, কানের দুল ও আংটি মিলে প্রায় এক ভরির স্বর্ণ দিয়ে দেই। এসময় ডাকাতরা আটটি মোবাইল ফোনের মধ্যে চারটি অ্যান্ড্রয়েড ও চারটি বাটন ফোন, একটি ল্যাপটপ ও ঘরে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এক ঘণ্টা ধরে ঘরের মধ্যে ডাকাতের অত্যাচারে আমার বৃদ্ধ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনার পর ভোরে ও সকালে দুই দফা দৌলতপুর থানা পুলিশ পরিদর্শন করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ওই বাড়িতে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। বিস্তারিত জানছি। ডাকাতদের আচার-ব্যবহার সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। যাতে তারা স্থানীয় কিনা বোঝার চেষ্টা করছি। মামলার বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিস্তারিত জেনে পরে জানানো হবে।
তিনি জানান, এর আগে থানার সিনিয়র অফিসাররা এসে তদন্ত করে গেছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম