শীত ও গ্রীষ্ম দু’মৌসুমেই খুলনায় তরমুজের আবাদ হচ্ছে। বীজ রোপন থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত সময় ৮০ দিনের। উৎপাদন খরচ এক মৌসুমে বিঘা প্রতি ২০ হাজার টাকা, বিক্রি তিন লাখ টাকা। শীত মৌসুমে ৭ হাজার এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে সাড়ে ৩ শ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। সব মিলে দু’মৌসুমে খুলনায় ৮শ’ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের হাতছানি দিচ্ছে।
আম্ফান-ইয়াস, নদী ভাংগন, রোগবালাই, করোনা ও আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ির দাম ওঠানামায় ফি বছর চাষিরা লোকশান গোনে। অনেক ক্ষেত্রে হারির টাকা বাকি থাকে। লোকসান এড়াতে চিংড়ি চাষিদের একাংশ তরমুজ আবাদে নেমেছে। জেলার দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলায় শীত মৌসুমে ৭ হাজার ৫শ’ ১২ হেক্টর জমিতে আবাদ হবে। আগামী মাস থেকে চাষ শুরু, ফেব্রুয়ারীতে ফসল তোলা। গ্রীষ্ম মৌসুমে সাদামাছের ঘেরের পাড়ে ৩শ ১৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হবে। গ্রীষ্ম মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন জুড়ে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান তরমুজ চাষ প্রসঙ্গে বলেছেন, শীত মৌসুমে এর আবাদ প্রসার হচ্ছে। বিঘা প্রতি ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়। এতে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসান খান তথ্য দিয়েছেন, এবারের শীত মৌসুমে ৯ ইউনিয়নে তিন হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে আবাদ হবে। বাজুয়া, কৈলাশগঞ্জ, দাকোপ ও লাউডোব ইউনিয়নের ৬ হাজার চাষি এর সাথে সংশ্লিষ্ট। ৮০ দিনের মধ্যে তরমুজ বাজারজাত হয়। বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ শীত মৌসুমে ২০ হাজার টাকা।
বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেছেন, ইতিপূর্বে সুরখালী, গঙ্গারামপুর ও ভান্ডারকোট ইউনিয়নের একাংশ জুড়ে উৎপাদন হতো। এবার বটিয়াঘাটা ইউনিয়নের ফুলতলা, হাটবাটি ও হোগলবুনিয়া গ্রামে আবাদ হবে। গেল মৌসুমে ২হাজার ২শ হেক্টর জমিতে আবাদ হলেও এবারের লক্ষমাত্রা ৩হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে।
দাকোপ উপজেলার বটবুনিয়া গ্রামের চাষি প্রদিপ রায়, দীলিপ মন্ডল, সন্তোষ মন্ডল ও হেকমত আলী মোল্লা জানান নোনা পানির চিংড়ি চাষের জমির পরিধি কমেছে। আমন কাটার পরে সেই জমিতেই তরমুজের আবাদ হবে। বলা যেতে পারে, বছর জুড়ে তরমুজের আবাদ। ফলে কৃষি ও পরিবহন শ্রমিকদের সারা বছরের কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই