ঘটনা ২০১২ সালের। মে মাসের ২০ তারিখ সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে প্রস্তুত জাকির মুহুরি। এরমধ্যে কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে তার গতিপথ রোধ করে। নাম জানা মাত্র সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। তারা বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে যশোর সিএমএইচ- এ নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
দীর্ঘ ১০ বছর পর এ চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রহস্য বের করল খুলনা জেলা পিবিআই। সোমবার রাতে এ মামলার অর্থের যোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী বাহাউদ্দিন খন্দকারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাকে নগরীর বয়রা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাহাউদ্দিন ওই এলাকার আ: ছাত্তার খন্দকারের ছেলে।
পিবিআই খুলনার মুখপাত্র পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাকির মুহুরির সহকারী হিসেবে কাজ করত বাহাউদ্দিন। তাছাড়া ভিকটিমের তৃতীয় স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এটা জানতে পেরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। একপর্যায়ে বাহাউদ্দিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। এক সময়ে সুযোগও এসে যায়। ভাড়াটে খুনী ঠিক করে বাহাউদ্দিন। ওই দিন সন্ধ্যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার চেম্বারের সামনে যায়। অফিস বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতির সময় সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে। বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। মারত্মক জখম অবস্থায় মার্কেটের অন্যান্য সদস্যরা তাকে নিয়ে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থা খারাপ হলে তাকে যশোর সিএমএইচ-এ প্রেরণ করা হয়। পথিমধ্যে তিনি মারা যান। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে খুলনা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি ঘটার দু’দিন আগে বাহাউদ্দিন নেপালে চলে যায়। পাঁচ দিন পর তিনি দেশে ফেরেন। ফিরে তিনি উচ্চ আদালত থেকে গ্রেপ্তারসহ হয়রানি না করার জন্য মিস পিটিশন মামলা করেন। যার নং ৭০৫৯/১২। মামলা দায়ের করে সময় বর্ধিত করে আসছিল সে। উক্ত মিসপিটিশনটি দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২০২১ সালে নিস্পত্তি করা হয়। নিস্পত্তি আদেশ পাওয়ায় সোমবার রাতে বয়রা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলাটি পিবিআই এর আগে সদর থানা পুলিশ, পরে ডিবি, এরপর সিআইডি গ্রহণ করে। সাত বছর তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন। পরবর্তীতে বাদীর না রাজি পিটিশনে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেয়। বাহাউদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের নিকট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত আছে এমন আরও এক ব্যক্তির নাম বলেছে। তাকে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
২০১৯ সালে মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ের এসআই পলাশ চন্দ্র রায়। তিনি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। তারপর এর ক্লু বের করতে সক্ষম হন।
খুলনা গেজেট/ এস আই