দক্ষিণাঞ্চলের পরিবেশ প্রতিবছর উত্তপ্ত হচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি মাসে নীচে নামছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। গত বছর এসময়ের চেয়ে খুলনায় এখন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশি। অপরিকল্পিত নগরায়ন, কংক্রিট ও কাঁচের ব্যবহার বৃদ্ধি, বৃক্ষ নিধন, কৃষি জমির পরিমাণ কমায় তাপমাত্রা বাড়ছে।
দেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে খুলনা। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে নানা প্রভাব পড়েছে। গ্রীষ্মের সবজি দাবদাহে পুড়ছে। প্রকৃতিতে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বোরো সহনশীল। এবার বোরো মৌসুমে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী ওঠায় ধানের দশ শতাংশ চিটে পাওয়া গেছে। দাবদাহে জেলার ১৯ হেক্টর জমির বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। লবনাক্ততার পরিমাণ বেড়েছে।
আবহাওয় অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গেল বছরের ১৫ এপ্রিলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ বছরের ২৫ এপ্রিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এই সূত্র উল্লেখ করেন, ২৬ ও ২৭ এপ্রিলে যথাক্রমে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ জানান, আগামী শুক্র ও শনিবার কাল বৈশাখী ও বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পরিমাণ হবে মাঝারী ধরণের। গত ৫ এপ্রিল সর্বশেষ বৃষ্টি হয় ২ মিঃ মিঃ। আগামী মাসে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
সারফেস আরবান হিট আইল্যান্ড ইনটেনসিটি ইন ফাইভ মেজর সিটিজ অব বাংলাদেশ : প্যাটার্নস ড্রাইভার এ্যান্ড ট্রেন্ডস শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই দশকে ঢাকায় তাপমাত্রা বেড়েছে ২ দশমিক ৭৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চট্টগ্রাম দ্বিতীয় স্থানে। দুই দশকে খুলনায় ১ দশমিক ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে। এ সময়ে সবুজ গাছ কেটে খুলনা নগরীতে অপরিকল্পিতভাবে বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মিত হয়েছে একাধিক। দারিদ্রতা, সুন্দরবনে কাঠ ও মাছ আহরণ নিষিদ্ধ, নদী ভাঙ্গন, সিডর, আইলা ও আম্ফানে উপকূলের জনগোষ্ঠী খুলনা শহরে আশ্রয় নেওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধিও তাপমাত্রা বাড়ার অন্যতম কারণ।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি