খুলনা মহানগরীতে বিশেষায়িত চোরের উৎপাত বেড়েছে। দিন-রাতে সংঘবদ্ধ ওই চোরের দল মানুষের বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিসও চুরি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চোর দলের সদস্যরা বেছে বেছে ইলেকট্রনিক সামগ্রী চুরি করছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে নগরীর বেশকিছু জায়গার কয়েকটি চুরির ঘটনার তথ্য খুলনা গেজেট-এর হাতে আসায় এ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে অনেকেই মন্তব্য করে বললেন, ‘চোর দলের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী কোন মহল। ফলে চুরি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে তারা।’
নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। বেছে বেছে ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মূল্যবান যন্ত্রাংশ, বাসার স্বর্ণালংকার, টিভি, মোবাইলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। তবে বেশির ভাগ ভুক্তভোগী থানায় মামলা করছেন না। কারণ মামলা করে কোনো প্রতিকার মেলে না। উদ্ধারও হয় না চুরি হওয়া মালামাল।
মহানগরীর বসুপাড়া নর্থখাল ব্যাংক রোড ৫২-সুলাইমান নগর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘রূপসা’ কার্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটে। রূপসা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি অফিসের কার্যক্রম শেষে সবকিছু বন্ধ করে বের হয়ে যান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরের দিন সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রূপসা সংস্থার অফিস সহকারি কেয়া খাতুন কক্ষে ঢুকে দেখেন অফিসের ভিতরে ও টেবিলের ওপর এলোমেলো। টেবিলের ওপরে রাখা চারটি ল্যাপটপ নেই। অফিসের একটি জানালা ভাঙা।
ওই ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে বসুপাড়া আরও দুটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। চারতলা বিশিষ্ট একটি ভবনের গ্রীল কেটে দিন-দুপুরে চোরেরা ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকারসহ ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে যায়।
চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি নগরের শঙ্ক মার্কেট এলাকায় দুপুরে মো. আব্দুল্লাহ আওয়াল নামের একজন মাদ্রাসা শিক্ষকের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসহ টাকা ছিনিয়ে সংঘবদ্ধ ওই দলের সদস্যরা।
রাতে বাসায় কেউ না থাকায় নগরীর মুজগুন্নী পার্কের পাশে একটি বাসাবাড়ির নীচতলার গ্রীল কেটে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায় চোরে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই বাড়ির মালিক।
গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ের একটি আইটি ফার্মে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই ফার্ম থেকে একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায় চোরে। বিষয়টি পুলিশকে না জানিয়ে নিজ উদ্যোগে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে বেসরকারি ওই আইটি ফার্ম কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কেসিসি’র অন্তর্গত পাবলা ৬ নম্বর ওয়ার্ডেও সম্প্রতি চুরির ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ পাবলা এলাকার কয়েকটি বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র গত মাসের কয়েকদিনের ব্যবধানে চুরি হয় বলে জানা গেছে।
৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ সামসুদ্দীন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছিলেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় চুরি বন্ধ এবং চোর চিহ্নিত করার লক্ষে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে এবং বিভিন্ন মোড়ে প্যানা টানানো হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে কাউন্সিলরের মোবাইল নাম্বার উল্লেখ করা হয়েছে। দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ও কাউন্সিলরকে অবগত করার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট / এআর