খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে অতিসত্ত্বর গতিরোধক (স্পিডব্রেকার) ও ওভারব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট সংলগ্ন চার লেনের রাস্তার কাজ চলমান। সড়কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলাচলের প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এই সড়কে প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ী, অ্যাম্বুলেন্সসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রায় ২০০ গাড়ী চলাচল করে। কিন্তু প্রতিদিন বিভিন্ন রুটের শত শত গাড়ি অতি দ্রুতগতিতে চলার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে মেইন গেটটি অত্যন্ত দুর্ঘটনা প্রবণ হয়ে উঠেছে যা শিক্ষার্থী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এছাড়া সড়কটিতে নির্মাণাধীন আইইআর ভবন, মেডিকেল সেন্টার ও রাস্তার বিপরীত পার্শ্বে সরকারি দেলদার আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ায় সেখান দিয়েও প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী রাস্তা পারাপার হয়। উক্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে একটি, নির্মাণাধীন আইইআর ভবন ও মেডিকেল সেন্টারের সামনে একটিসহ মোট দু’টি গতিরোধক এবং একটি ওভারব্রিজ অতিসত্ত্বর নির্মাণ করা প্রয়োজন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গল্লামারী এলাকার এক বাসিন্দা জানান, সাতক্ষীরা ও পাইকগাছা রুটসহ বিভিন্ন রুটের গাড়ী এখন এই সড়ক দিয়ে চলছে। সোনাডাঙ্গা থেকে নির্ধারিত সময়ে গাড়ি ছেড়ে গল্লামারী পৌঁছে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে যাত্রীর জন্য। পরে গল্লামারী ছেড়েই দ্রুতগতিতে জিরোপয়েন্টের দিকে ধাবিত হয়। এর ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। এছাড়া সোনাডাঙ্গা বাইপাস সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন বাস-মিনিবাস-ট্রাকসহ সকল যানবাহন গল্লামারী-জিরোপয়েন্ট দিয়ে চলায় চাপ বেড়েছে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, মহাসড়কটির এই অংশে যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবে প্রথম স্তর কার্পেটিং করা হয়েছে। আরও দুটি লেয়ার বসার পর সড়কটির কাজ আংশিক শেষ হবে। গতিরোধক ও ওভারব্রিজের বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমার সাথে ইতোমধ্যে কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পত্রের ব্যাপারে অবহিত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমরা যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। উপাচার্যের সাথে সড়কটি দৃষ্টিনন্দনসহ ওভারব্রিজ, ওয়াকওয়ে নির্মাণের বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা ও ডিজাইন অনুযায়ী সকল কাজ সম্পন্ন করার বিষয়টি সময় সাপেক্ষ। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জিরোপয়েন্ট থেকে গল্লামারী অংশে যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবে প্রথম স্তর কার্পেটিং দেওয়া হয়েছে। মাঝখানে ডিভাইডার নির্মাণকাজ চলছে। ওভারব্রিজের ডিজাইন চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে। এর জন্য আলাদা প্রায় ৪ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অনুমোদন হলে নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, সড়কের এ অংশের নির্মাণকাজের এখনও অনেক পর্যায় বাকি। এই মুহূর্তে গতিরোধক দেওয়া কঠিন। তাহলে আবার তা ভাঙতে হবে। বারবার ভাঙতে হলে রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তবে আপাতত পারাপারের সুবিধার জায়গায় জেব্রা ক্রসিং মার্ক, গল্লামারী ও জিরোপয়েন্টে গতিসীমা বিষয়ক দু’টি সাইনবোর্ড স্থাপন করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেহেতু মহাসড়কের এই অংশ এখন চার লেন তাই চলাচলে সুবিধা হয়েছে। যানবাহন একমুখী হচ্ছে না। ফলে সে অর্থে দুর্ঘটনার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার কথা। তবে জিরোপয়েন্ট এবং গল্লামারীতে ট্রাফিক পুলিশ যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা নিয়ন্ত্রণে তৎপর হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও কমবে।
খুলনা গেজেট/এনএম