খুলনার খালিশপুর নয়াবাটি বাজার। অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে বৃহৎ কবুতরের বেচাকেনার হাট। কবুতরের পাশাপাশি এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও বেচাকেনা হয়। বাজারটি পদ্মার এপারের বৃহৎ কবুতরের হাট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন থেকে সড়কের উপর কবুতরের হাটটি পরিচালিত হয়ে আসছে। প্রতি শুক্রবার খুব সকাল থেকেই দূর দূরান্ত থেকে কবুতর ব্যবসায়ি এবং পাখিপ্রেমী ক্রেতাদের আগমন শুরু হয় এই হাটে। কবুতর এবং দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি কেনা বেচা চলে জুম্মার নামাজের পূর্ব পর্যন্ত। কবুতর ব্যবসায়ি এবং পাখি ক্রেতা প্রেমীরা এ হাট থেকে তাদের পছন্দের কবুতর এবং পাখি ক্রয় করে থাকে। মূল সড়ক ছাড়াও সড়কের আশে পাশের গলিতে বিস্তৃত লাভ করে হাটটি।
খুলনা বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেও এসকল পাখির বিক্রেতাদের ধরে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়। যখনই অভিযান পরিচালনা করা হয় তখনই পাখি বিক্রেতারা কৌশলে বিভিন্ন জায়গা দিয়ে পালিয়ে যায় অথবা আশেপাশের বাসা-বাড়ী, দোকানপাটে আশ্রয় নেয়। এছাড়াও স্থানীয় একদল লোক রয়েছে যারা কৌশলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অভিযান পরিচালনাকারী দলের গাড়ী ও সদস্যদের ঘেরাও করে রাখে। এর আগেও কয়েকবার প্রশাসন ও পুলিশ নিয়ে এই বাজারে অভিযান পরিচালনা করলেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
অবশেষ শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের উদ্যোগে এবং পরিবেশবাদী সংগঠন আলোর মিছিলের সমন্বয়ে পরিচালিত অভিযানটি কিছুটা সফল হয়। অভিযানকারী দলটি ২/৩ জন পাখি বিক্রেতাকে ধরতে পারলেও বাকীরা পালিয়ে যায়। অভিযানকারী দলটি এ সময় উক্ত হাট থেকে টিয়া, ময়না, শালিক, ঘুঘু, জল মুরগি, ময়নাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির ৬৫ টি পাখি উদ্ধার করে। যেগুলি আজ বিভাগীয় বন অধিদপ্তরের সামনে থেকে অবমুক্ত করা হবে।
অভিযান পরিচালনার পর অভিযানকারী দলের কর্মকর্তাবৃন্দ উক্ত বাজার কমিটির সভাপতিসহ কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেন। এ সময় কমিটির নেতৃবৃন্দ অভিযানকারী কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন যে তারা বাজারে কোন দেশীয় পাখি বিক্রি করতে দিবেন না। এ সময় সাধারণ জনগণ এবং ক্রেতাদের মাঝে বিভিন্ন সচেতনতামূলক লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।
বন বিভাগের সাথে অভিযানে অংশগ্রহণ করেন আলোর মিছিলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আহবায়ক শেখ তারেক, বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী টিমের প্রধান হাসিবুর রহমান, মঞ্জুরুল ইসলাম বাবু,আহসানুল হক হিরো, আকিব, গফুর মোড়ল, রাসেল কবির প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/ টি আই