জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির মুখে বারবার দুর্যোগের কবলে পড়া উপকূলের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবিতে সাতক্ষীরার সুন্দরবনের খোলপেটুয়া নদীতে নৌ-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বে সরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের মাসব্যাপী খাদ্য অধিকার প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার (২৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা শ্যামনগর খোলপেটুয়া নদীর নীলডুমুর এলকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলীয় বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের পেছনে খোলপেটুয়া নদীজুড়ে বসেছিল এই নৌবন্ধন। এতে বিপুল সংখ্যক নৌকা ও তার আরোহীরা পোস্টার ও ব্যানার সহ কয়েকঘন্টা ধরে অবস্থান নেন। এসময় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, দেশের ৩৭ বন্যা কবলিত জেলাকে রক্ষা এবং দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার দাবি তুলে নানা ধরনের শ্লোগান দেন নৌ-বন্ধনে অংশগ্রহণকারিরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আফাজউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নৌ-বন্ধনে বক্তব্য রাখেন, লিডার্সের মোঃ মনোয়ার হোসেন, রনজিত মন্ডল, অসিত মন্ডল, মাসুদুল তরফদার, বাঘবিধবা রিজিয়া খাতুন ও শাহিদ খাতুন, ইলিয়াস সানা প্রমুখ।
তারা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে উপকূলের এই অঞ্চল বারবার ঝড় ও জলোচ্ছাসের শিকার হচ্ছে। সম্পদ ও প্রানহানি ঘটছে অহরহ। দুর্যোগের মুখে হাজার হাজার পরিবার হারাচ্ছেন তাদের বসতভিটা ও বাড়িঘর। কৃষি ও মৎস্য সম্পদ হারিয়ে তারা পানিবন্দী জীবন থেকে রক্ষা পেতে উদ্বাস্তু হচ্ছেন। এরই সাথে তাদের মুখে নেই খাবার, নেই সুপেয় পানি। পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে তাদের জীবন হয়ে পড়ছে রোগগ্রস্থ। এসব মানুষকে বাঁচাতে হলে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান করতে হবে। উপকূলবাসীকে কৃষি ও মৎস্য চাষে পুনর্বাসনের সুযোগ ছাড়াও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাদের জন্য টেকসই গৃহ নির্মানও জরুরী হয়ে পড়েছে। বক্তারা খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নের জোর দাবি জানান।
স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা লিডার্স ও খাদ্য নিরাপত্তা (খানি) আয়োজিত এই নৌবন্ধনে অংশ নেন উপকূল এলাকার শত শত মানুষ। তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আমাদেরকে দুর্যোগ থেকে বাঁচান। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা দিন।’
খুলনা গেজেট/ এস আই