খুলনার কয়রায় একই পরিবারের তিন সদস্যের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ৩৬ ঘন্টা পার হলেও এখনও পর্যন্ত কোন ক্লু উদ্ধার হয়নি। সিআইডি, পিবিআই’র সদস্যসহ খুলনার সহকারি পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) মোঃ সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় নিহত হাবিবুল্লাহ গাজীর মা কোহিনুর খানম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে কয়রা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার নং-২৪। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে নেয়া চারজনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানা যায়।
এদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে বাবা-মা ও মেয়ের লাশে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়। আজ বুধবার (২৭ অক্টোবর) মাগরিব বাদ বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্হনে তিনজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার(২৫ অক্টোবর) উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামে বাবা-মা ও মেয়েকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় আব্দুল মাজেদের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা সোমবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় নৃশংস এ হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে পূর্ব শত্রুতার জেরসহ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের দিনে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চার জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তারা হলেন- জিয়া (২৭), সুলতানা (২৫), নাঈম (২২) ও কিবরাল (৩০)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনার নির্ভরযোগ্য কোন ক্লু উদ্ধার হয়নি।
আরও পড়ুন: কয়রার ট্রিপল মার্ডারে থানায় মামলা, ক্লু পায়নি পুলিশ
কয়রা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রবিউল হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে চার জনকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
খুলনার সহকারি পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ঘটনার ক্লু উদ্ধারে তৎপর রয়েছি। কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে ঘটনার ক্লু উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আমরা প্রতিটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার ক্লু উদঘটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশাকরি দ্রুতই আমরা ক্লু জানতে পারবো।
আরও পড়ুন: কয়রায় বাবা-মা-কন্যাকে কুপিয়ে হত্যা (ভিডিও)
উল্লেখ্য, কয়রায় বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে বসবাসকারী মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুকুরে মঙ্গলবার ( ২৬ অক্টোবর) সকালে লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসি পুলিশকে জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। নিহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
নিহতরা হলেন, বামিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ গাজীর পুত্র হাবিবুল্লাহ গাজী (৩৩), তার স্ত্রী বিউটি খাতুন (২৫) ও একমাত্র কন্যা হাবিবা খাতুন টুনি (১৩)। হাবিবুর পেশায় দিনমজুর, তার স্ত্রী গৃহিনী ও একমাত্র মেয়ে হাবিবা খাতুুন টুনি ৭ম শ্রেণির ছাত্রী।
খুলনা গেজেট/ টি আই