যশোরে রাজারহাটের চামড়ার মোকাম জমজমাট হয়ে উঠেছে। দেশের অন্যতম এ হাটে এদিন কোটি টাকার চামড়া বিক্রি হয়েছে। তবে হাটে এদিন বর্গফুটে নয়, থামকো দরে পিস হিসেবে বিক্রি হয়েছে পশুর চামড়া।
ঢাকার বাইরে গরুর চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। আর ছাগলের চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা। কিন্তু রাজারহাট চামড়ার মোকামে কেনাবেচা হচ্ছে থামকো পিস দরে। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দরে বর্গফুট হিসাবেই তারা বেচাকেনা করছেন। তবে তার পরিমাপ হচ্ছে চোখের আন্দাজে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাজারহাটে কোরবানি ঈদের পর চামড়ার বড় হাট বসবে আগামী শনিবার। এদিন দক্ষিণবঙ্গের সবচেয়ে জমজমাট হাট হবে বলে ব্যবসায়ীদের আশা। এদিন ঢাকার পাইকারদের আগমনে কয়েক কোটি টাকার চামড়া বিক্রি হবে বলে তারা আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন।
রাজারহাট চামড়ার মোকামের ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন কোরবানি ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ৩৫০টি গরুর কাঁচা চামড়া কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন হাটে বসেই ৩৫০টি গরুর চামড়া কিনেছি। ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে প্রতিটা চামড়া কেনা হয়েছে। এ হাটে তিনি লাভেই চামড়া বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। সরকার নির্ধারিত বর্গফুট হিসাবে না কিনে প্রতি পিস হিসাবে কিনছেন কেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, চোখের আন্দাজে ফুট হিসাবেই কেনা হয়। গত বছরের তুলনায় এবার কাঁচা চামড়ার দাম বেশি দাবি করে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর চামড়ার দাম কিছুটা বাড়লেও ছাগলের চামড়ার দাম একই রকম রয়েছে। ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা দরে প্রতিটা ছাগলের চামড়া বেচাকেনা হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিনের মতো অন্য ব্যবসায়ীরাও বর্গফুট নয়, প্রতি পিস হিসাবে চামড়া কিনেছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, রাজারহাটে ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জমজমাট কাঁচা চামড়ার বেচাকেনা হয়েছে। এদিন এই মোকামে অন্তত ছয় হাজার গরু ও পাঁচ হাজার ছাগলের কাঁচা চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মাদ্রাসায়ও চামড়া কেনাবেচা হয়েছে।
মামুন হোসেন নামে আরেক চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, রাজারহাটের বাইরে বিভিন্ন মাদ্রাসায় বড়সংখ্যক চামড়ার বেচাকেনা হয়েছে। এবার আমি যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি ও খানকায়ে শরিফ মাদ্রাসা থেকে ৭০০ টাকা দরে প্রতিটা গরুর চামড়া কিনেছি। যা গত বছর গড়ে ৫২০ টাকা দরে কিনেছিলাম। দুই মাদ্রাসা ও রাজারহাট মোকাম থেকে ঈদের দিনে ৫৫০টি গরুর চামড়া তিনি কিনেছেন। তিনি জানান, ফুট মেপে চামড়া কেনাবেচা হয় না। চোখের আন্দাজে ফুট ধরে কেনাবেচা হয়। এ হিসাবে মঙ্গলবার হাটে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তাদের আশা আগামী শনিবার অন্তত কুড়ি কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হবে এবং তারা ঢাকার মহাজনদের কাছ থেকে বিগত বছরের পাওনা টাকা বুঝে পাবেন।