নওগাঁর সাপাহারে লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। ওই কিশোরীর নাম টুম্পা কর্মকার। রাজকুমার কর্মকার ও পুষ্প রানীর বড় মেয়ে টুম্পা। তার বাড়ি উপজেলার পাতাড়ী ইউনিয়নের শিমুলডাঙ্গা রামাশ্রম গ্রামে।
ঘটনাটি প্রচার হওয়ার পর রোববার সকাল থেকে তাদের বাড়িতে কৌতূহলী জনতা ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা যায়, রাজকুমার কর্মকার ও পুষ্প রানীর বড় মেয়ে টুম্পা কর্মকার। তার বয়স ১২ বছর এবং স্থানীয় বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। তাদের পরিবার দরিদ্র। পারিবারিক অসচ্ছলতা ও বাবা প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে টুম্পা বিভিন্ন কাজকর্ম করে পরিবারকে সহযোগিতা করতো।
গত ১০-১২ দিন থেকে টুম্পার শারীরিক ও কণ্ঠের কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তার পরিবার ধারণা করছিল পরিশ্রমের কারণে এমনটা হতে পারে। টুম্পার শারীরিক পরির্বতন অনেক আগে থেকেই এমন হয়ে আসলেও পরিবার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। কিন্তু ইদানীং তার কণ্ঠ ও কথা অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। এভাবে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে গুঞ্জন শুরু হয়।
টুম্পার মা পুষ্প রানী বলেন, মেয়ের শারীরিক গঠন পরিবর্তন হলেও প্রথমে কিছুই মনে করেনি। অনেক দিন থেকেই এ বিষয়টি জানি। তবে লজ্জায় মুখ খুলতে পারিনি। এছাড়া এটা বেশি দিন সমাজে ঢেকে রাখাও যাবে না। তার কথা ও গলার শব্দ দিন দিন ছেলের মতো হয়ে যাচ্ছে। তাই নিজেই প্রকাশ করলাম। নিজ চোখে দেখেছি মেয়ে এখন ছেলেতে পরিণত হচ্ছে।
টুম্পা জানায়, আমি অনেক আগেই বুঝেছি। লিঙ্গের পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। প্রথমে আমার লজ্জা করছিল। তাই প্রকাশ করছিলাম না। পরে আমার মাকে ও পাড়াপ্রতিবেশীকে বিষয়টি জানিয়েছি।
প্রতিবেশী আব্দুল বারী ও মোকসেত বলেন, গত কয়েক দিন থেকে শোনা যাচ্ছে টুম্পা মেয়ে থেকে ছেলে হচ্ছে। তাদের বাড়িতে গিয়ে মা ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি সত্যই মেয়ে থেকে ছেলে হয় তাহলে ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হবে আসল রহস্য কী। মুখের কথাই তো বিশ্বাস করা যাবে না।
নওগাঁ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল বারী বলেন, আমরা সাধারণত ছেলে থেকে মেয়ে হতে চাওয়া রোগীদের চিকিৎসা করে থাকি। তবে ছেলে থেকে মেয়ে হওয়া জটিল বিষয়। এটা কীভাবে হলো না দেখে বলা যাবে না। তবে মনে হচ্ছে পরিবার আগে থেকেই বিষয়টি জানতো।
নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ বলেন, বিশেষ করে যারা হরমোন নিয়ে কাজ করেন তারা সঠিক ধারণা দিতে পারবেন। তবে ছেলে থেকে মেয়ে বা মেয়ে থেকে ছেলে এটি নতুন কোনো ঘটনা না। আবার হঠাৎ করেই শারীরিক পরিবর্তন হয় না। যখন আস্তে আস্তে বুঝতে পারে তখন নিজেকে সেই লিঙ্গ ঘোষণা করে।
তিনি বলেন, যদি স্থানীয় উদ্বেগের কোনো কারণ থাকে তাহলে আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মতামত দেওয়ার চেষ্টা করব। অথবা মতামতের জন্য মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দিব।
খুলনা গেজেট/ এস আই