সাতক্ষীরায় ডিসিআর করে দেওয়ার নামে প্রতিপক্ষের কাছ কাছ থেকে টাকা নিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে উচ্ছেদ করে দেওয়া সাত ভূমিহীন পরিবার তাদের জমি বুঝে নিয়েছেন। রোববার(১৬ জানুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বরেয়া মৌজার ২১ বিঘা জমি বুঝে নেন ওই ভূমিহীনরা। এ ঘটনার পর র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রামের রমজান মীর জানান, তারা বর্তমানে বরেয়ার ভোটার। ২০১৫ সালের ২৪ আগষ্ট তার ভাই আশরাফ মীর ও ভাইয়ের শ্যালক ইছহাক আলী পাড়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার আসামী ইন্দ্রনগর গ্রামের করিম পাড়, মনিরুল সরদার, নুরুজ্জামান ও কাদের পাড়সহ অনেকেই। আশরাফ মীর মারা যাওয়ার পর একটি মহল তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে মাঘুরালি গ্রামের মাজেদ সরদারের ছেলে ছাত্তার সরদারের কাছ থেকে ১৮ লাখ টাকা নিয়ে তারসহ খায়রুল সরদার, অলিউর রহমান,জব্বার গাজী, ছাদেকুল, শহীদুল ইসলাম ও বুধোর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে সাত্তারের নেতৃত্বাধীন করিম পাড়, কাদের পাড় ও মনিরুল পাড়সহ কয়েকজন। এ ঘটনায় তিনি প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি কালীগঞ্জ থানায় ১২১৯ নং সাধারণ ডায়েরী করেন। একইভাবে তারা খুলনা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
রমজান আলী মীর আরো বলেন, তারা ওই জমি ডিসিআর এর আবেদন করেও পাননি। অথচ দখল করার চেষ্টাকারি কোটিপতি আব্দুস সাত্তার সরদার ২০১৯ সালে তারালী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইউনুছ আলীকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে একই ২১ বিঘা জমির একসনা ডিসিআর নিয়ে তিনি সেখানে মাছের ঘের শুরু করেন। ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর তিনিসহ ক্ষতিগ্রস্তরা সাত্তার সরদারের ডিসিআর বাতিলের জন্য কালীগঞ্জ সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আবেদন করা হয়। অথচ সাত্তার সরদার নিজের মনগড়া ছয়জনের নামসহ নিজের নাম উল্লেখ করে ওই জমি আবারো ডিসিআর নেন। এ দীর্ঘ সময়ে তারা পথে পথে ঘুরেছেন। একপর্যায়ে রোববার সকালে তারা পানিবিহীন জায়গা দখলে নেন। সাত্তার সরদারের ভাঙচুর ও লুটপাটের মিথ্যে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে এলে তারা তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বাস্তবতা জেনে তারা চলে যান।
এ ব্যাপারে সাত্তার সরদার সাংবাদিকদের জানান, তারা যাদের কাছ থেকেই জমি নেন না কেন ডিসিআর তাদের। তাদের জমি জোর করে দখল করা হয়েছে। কিছু জিনিসপত্র লুট করার অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। রমজান মীরসহ কয়েকজনের জমি বেদখল করা হয় ২০১৮ সালে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে। বর্তমানে ওই জমি তাদের বলে দাবি করেছে রমজান মীরসহ সাতজন।
খুলনা গেজেট/ টি আই