সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের গোলখালী মহাশ্মশানের কাছে পড়ে থাকা একটি প্যাকেট থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকটিকে দত্তক নেয়ার জন্য সোমবার পর্যন্ত ১২ জনের অধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। আবেদনকারিদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাংবাদিক কন্যা স্কুল শিক্ষক, চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। মাত্র ১ দিন বয়সের শিশুটি এখন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সে এখন সম্পূর্ন সুস্থ রয়েছে।
কালিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, কুড়িয়ে পাওয়া ফুটফুটে শিশুটির স্থানীয় ভাবে নাম রাখা হয়েছে মহারাজ। এদিকে রাজপুত্রের মতো চেহারার ওই শিশুটিকে দত্তক হিসাবে পাওয়ার লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক কন্যা এক স্কুল শিক্ষক, চিকিৎসক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনের অধিক ব্যক্তি আবেদন জানিয়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার বিকালে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের গোলখালী মহাশ্মশানের কাছে পড়ে থাকা একটি প্যাকেটে থেকে ওই নবজাতকটিকে উদ্ধার করেন কয়েকজন পথচারী। ওই পথে যাওয়ার সময় মহাশ্মশান এলাকায় আবর্জনাযুক্ত স্থানে বেড়ার গায়ে ঝুলে থাকা একটি বাজার করার ব্যাগের ভিতর থেকে কান্নায় শব্দ শুনতে পেয়ে তারা এগিয়ে যান এবং ব্যাগের ভিতর থাকা নবজাতকটিকে উদ্ধার করেন। তারা তাৎক্ষণিক ওই নবজাতককে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সামাজিকভাবে অপমানের ভয়ে নিজের অবাঞ্চিত সন্তানকে রাস্তায় আবর্জনাযুক্ত স্থানে ফেলে দিয়ে গেলেন তার মা। অবৈধ মেলামেশার ফসল নিষ্পাপ শিশুটি কেন জন্মলগ্ন থেকেই নির্যাতনের শিকার হবে, এটাই এলাকাবাসীর জিজ্ঞাসা। যদিও পুলিশ বলছে অপরাধী মহিলাসহ জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘কুড়িয়ে পাওয়ার মাত্র ২-৩ ঘন্টা আগে শিশুটির জন্ম হয়েছে। কে বা কারা তাকে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি শিশুটি সম্পর্কে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে নিজ হেফাজতে রাখেন। এরই মধ্যে ফুটফুটে ছেলে শিশুটির ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। ছবি দেখে এই নবজাতককে দত্তক নিতে শুরু হয় হুড়োহুড়ি।’
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হক রাসেল জানান, এতক্ষণ পর্যন্ত তার কাছে ১২টির অধিক আবেদন এসেছে। অনলাইনেও কয়েকজন আবেদন করেছেন। এছাড়া বাচ্চাটিকে দত্তক নেয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ আসছে।
তিনি জানান, শিশুটিকে আরও একটু সুস্থ করে তোলার পর ২-১ দিনের মধ্যে বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে দত্তক দেওয়ার বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে। তবে শিশুটি এখন সুস্থ রযেছে।
খুলনা গেজেট/এনএম