দুপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নেওয়া হয় কলেজছাত্র তাহমিদুন্নবীকে। এরপর চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করতে থাকে পলাশ নামের অপর এক যুবক। যে ওই এলাকার একজন কাঠ মিস্ত্রি হিসেবে পরিচিত। তার সঙ্গে ছিল আরও পাঁচ সহযোগী। অন্যরা তাহমিদকে ধরে রাখে। আর পলাশ ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাটালি দিয়ে কোপাতে থাকে। এরপর মৃত ভেবে ফেলে রেখে যাওয়ার পর স্থানীয়রা মুমূর্ষ অবস্থায় দুপুরে তাকে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাতে তাহমিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ হাসপাতালেই মারা যায়।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, তাহমিদ পাবলা শাহাপাড়া এলাকার জনৈক খোকনের ছেলে। সবেমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রায়েরমহল ডিগ্রী কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ থেকে ফিরে বাসায় জোহরের নামাজ আদায় করে ভাত খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। এরমধ্যে বাড়ির সামনের কাঠ মিস্ত্রি পলাশ তাকে ডেকে নেয়। সেখানে পূর্ব থেকে পলাশের আরও ৫ সহযোগী অপেক্ষা করছিল।
তাহমিদ বের হওয়া মাত্র পলাশ তাকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারধর করতে থাকে। সাথে পলাশের সহযোগীরাও তাকে আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে কাঠের কাজে ব্যবহৃত বাটালি দিয়ে তাহমিদের ঘাড়ে, মুখে, পেটে ও বুকে মোট ৮ টি স্থানে জখম করে। ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসী আটক করে পলাশে কর্মচারী ভাইপো পিয়ালকে। দুপুরে তাকে মৃদু মারধর দিয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়।
মুমূর্ষ অবস্থায় তাহমিদকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় তার অবস্থার অবনতি হলে অপারেশনের কক্ষে নেওয়া হয়। রাত ১২ টার দিকে অপারেশন থিয়েটারেই তার মৃত্যু হয়। তাহমিদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দৌলতপুর সাহাপাড়া এলাকার হাজার হাজার মানুষ একনজর দেখার জন্য রাতে হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে।
তাহমিদের দুলাভাই আরজি উজ্জ্বল বলেন, দুপুরে কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে নামাজ আদায় করে ভাত খাওয়ার অপেক্ষায় ছিল তাহমিদ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পলাশ তাকে ডেকে নিয়ে মারধর ও বাটালি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে কোপাতে থাকে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে জনতার হাতে আটক হয় পলাশের ভাইপো পিয়াল। তাকে স্থানীয়রা মৃদু মারধর দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। কিন্তু ঘটনার পর থেকে পলাশ পলাতক রয়েছে।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নজরুল ইসলাম বলেন, শুনেছি ছেলেটি খুব ভাল। দুুপুরে ঘটনাটি ঘটার পর পরিবারকে মামলা করার জন বলা হয়েছিল। তারা পুলিশকে জানিয়েছিল ভিকটিমের অবস্থা ভাল। কিন্তু রাত ১২ টার পর জানতে পারলাম ছেলেটি মারা গেছে। বিভিন্নস্থানে পলাশের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাকে ধরতে পারলে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সব কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। তাকে আটক করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই