ব্রীজের সিঁড়ির রেলিংয়ে কাঁটাতারের ব্যারিকেড। উপরে জালির মতো বিচানো কাঁটাতার। যাতে মানুষ ব্রীজের উপরে উঠতে না পারে। তবুও অনেকটা বিশেষ কায়দায় হাটুগেড়ে দু’হাতের উপর ভর দিয়ে সিঁড়িতে উঠছে কিছু মানুষ। খুলনার রূপসা ব্রীজ (খানজাহান আলী সেতু) নিচে এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে যাতে জনসমাগম না ঘটে সেই কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রীজ কর্তৃপক্ষ। করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে খুলনায়। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে খুলনায় চলছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। এই পরিস্থিতিতেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে কিছু মানুষের মাঝে অনীহা দেখা দিয়েছে।
নগরীর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইটি অফিসার মুরাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি অফিসের জরুরি কাজে ব্রীজ এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে ব্রীজের সিঁড়ির নিচে অবস্থিত রেলিংয়ের উপরে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দেখতে পাই। অনেকেই সেই ব্যারিকেডের নিচ দিয়ে হাটুগেড়ে ও হাতের উপর ভর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ব্রীজে উঠছে।
নগরীর টুটপাড়া এলাকার সালমান হায়দার সেলিম বলেন, আজ (বুধবার) দুপুরে রূপসা ব্রীজ এলাকায় জরুরি প্রয়োজনে যাই। ব্রীজের পশ্চিমপাশে দেখতে পাই কিছু মানুষ সিঁড়িতে লাগানো কাঁটাতারের ব্যারিকেডের নিচ দিয়ে উপরের দিকে উঠছে। কৌতুহলবশত সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দৃশ্য দেখলাম।
লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, রূপসা ব্রীজের নিচে অবস্থিত সিঁড়ি দিয়ে কেউ যাতে উপরে উঠতে না পারে সেজন্য ব্রীজ কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ সেই ব্যারিকেড দেওয়া কাঁটাতারের নিচ দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে। বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবুও তারা উঠবে।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান বলেন, জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় রূপসা ব্রীজে জনসমাগম না হয় সেটি বলা হয়েছে। এখানে নিরাপত্তা এবং কোভিড-১৯ এর কারণে সেখানে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। মূলতঃ কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই এই পদক্ষেপ।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খুলনায় মঙ্গলবার (২২ জুন) থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। যা চলবে আগামী ২৮ জুন পর্যন্ত। বাস, ট্রেন, ইজিবাইক, থ্রিহুইলাসহ গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে আইনানুগ ব্যবস্থা।
খুলনা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষকে প্রতিনিয়ত সচেতন করা হচ্ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। তাহলে সংক্রমণ কমানো সম্ভব হবে।