খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৩
  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

কাঁচা মরিচের সেঞ্চুরি, বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ : উধাও খোলা সয়াবিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজার থেকে খোলা তেল উধাও। রমজানের আগে সেঞ্চুরি করলো কাঁচা মরিচ। বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজও। সব মিলিয়ে শুক্রবারের বাজার বলতে গেলে আগুন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্ব গতিতে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে নগরীর নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।

খুলনা নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজের মূল্য ৫৫ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। আর কাঁচা মরিচ একশ’ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে। তবে নগরীর কয়েকটি দোকানে এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল থাকলেও উধাও হয়ে গেছে খোলা তেল। প্রতিটি একলিটারের বোতল দোকানীরা ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। বাজারে পাঁচ লিটারের বোতল কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনালের কাঁচা মরিচের ব্যবসায়ী শেখ লুৎফর রহমান বলেন, পরিবহন খরচ বেড়েছে। শ্রমিকের কদরও বেড়েছে। বগুড়া, কাজীর হাট ও ময়মনসিংহের মাদারগঞ্জ কাঁচা মরিচের বড় মোকাম। সেখান থেকে দেশে প্রতিটি প্রান্তে কাঁচা মরিচ সরবরাহ করা হয়। ওই মোকামগুলোতে কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দিয়েছে। কাঁচা মরিচের গাছ মারা যাচ্ছে। মোকামগুলোতে আমদানি কমে গেছে। চাহিদার তুলনায় সেখানে ভিড় করছে অধিক ব্যাপারী। তাই সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশী দামে মাল কিনতে হচ্ছে। প্রতিদিন খুলনার বাজারে সাত ট্রাকের প্রয়োজন হলেও সেখানে চার ট্রাক মাল আসছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বাজারে ভারতীয় মরিচ নেই। শুক্রবার পাইকারী বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি মরিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন তিনি।

একই বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বয়াতি বলেন, ফরিদপুর জেলার ‘পেঁয়াজ কালি হাট’ দেশের বড় পেঁয়াজের মোকাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ব্যাপারীরা সেখানে এ পণ্যটি কিনতে আসে। এখন কালিকাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ পর্যায়ে। প্রতিবছর এ সময়ে দাম বাড়তি থাকে। তবে এবার বেশী বাড়েনি। মাঝে ভারি বৃষ্টির কারণে দাম বেড়ে আবার কমে গিয়েছিল। তবে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের সংকট থাকায় সেখানে দাম বেড়েছে। বেড়েছে পরিবহন খরচও। মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজে দু’তিন টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। তবে চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে এর দাম স্বাভাবিক হবে। তখন দাম ৩০ থেকে ৩২ টাকার মধ্যে থাকবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

ময়লাপোতা সান্ধ্যা বাজারের এক কাঁচা মরিচ বিক্রেতা বলেন, চারদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। জিয়া ও কাজীর হাটের সাদা মরিচ ৮০ টকা ও বগুড়ার বরজ মরিচ ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। মূল্যবৃদ্ধির কারণ তিনি জানেন না। তবে পাইকারী বাজার থেকে বেশী দামে ক্রয় করে তাকে এ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

শান্তিধাম, তারের পুকুরের পাশে অস্থায়ী বাজারের বিক্রেতা শহীদুল জানান, চার দিন হলো দাম বেড়েছে। তিনি মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫৭ থেকে ৬০ টাকা করে বিক্রি করছেন। বেশী দামে কিনে তাকে এ দরে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান।

খুলনা মহানগরীর কয়েকটি খুচরা দোকানে এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের দেখা মিললেও পাঁচ লিটারের বোতলর দেখা মেলেনি। তবে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দোকানে এক লিটারের কয়েকটি বোতল থাকলেও খোলা তেল তাদের দোকানে নেই।

সান্ধ্য বাজারে আলাপচারিতায় পরিচয় হয় মো: সোহান নামে এক ব্যক্তির সাথে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তিনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে গিয়ে তিনি রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। বেড়ে গিয়েছে বাড়িভাড়া ও পানির বিলও। তবে বাড়েনি তার আয়। পঞ্চাশ হাজার টাকায়ও সংসার চলে না, কঠিন হয়ে পড়েছে তার অবস্থা।

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!