খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

কলারোয়ায় চিনিগুঁড়া ধানে তৈরি ১৮ প্রতিমা, পূজার আগেই উৎসবের আমেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দূর্গা উৎসব। এ পূজা উদযাপন উপলক্ষে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মুরারিকাটি উত্তর পালপালা মন্দিরে ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধানের শৈল্পিক কারুকাজে নির্মাণ হয়েছে ১৮টি প্রতিমা। পূজা শুরুর এখনো ৭ দিন বাকি থাকলেও ধান দিয়ে নির্মাণ করা প্রতিমা দেখতে প্রতিদিন মন্দিরে মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে। পূজার আগেই সেখানে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাটি উত্তর পালপাড়া মন্দিরে তৈরি হয়েছে প্রতিমাগুলো। প্রতিমাগুলো দেখলে মনে হচ্ছে যেন সোনা দিয়ে মোড়ানো হয়েছে। পুঁথির মত একটা একটা করে ধান দিয়ে গেঁথে তৈরি করা হয়েছে এ প্রতিমা। যা প্রতিমা গুলোর সৌন্দর্য বর্ধন করেছে।

প্রতিমা তৈরির কারিগর শিল্পী পল্লত বিশ্বাস বলেন, ১৮টি প্রতিমা পূর্ণাঙ্গভাবে তৈরি করতে সম্পূর্ণ একমাস সময় লেগেছে। এই মন্ডপে দুর্গা, কার্তিক গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুরসহ আনুষঙ্গিক ১৮টি প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট, নকশী কাপড়ের পাড় ও বিচুলির ফ্রেম বা কাঠামো, মাটি ও বিশেষ শৈল্পিক কারু কাজ হিসাবে ব্যয়বহুল চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু কিছু অংশে ব্যয়বহুল রং স্প্রে করা হয়েছে। যার কারণে প্রতিমাগুলোর সৌন্দর্য আরও বর্ধিত হয়েছে।

মুরারিকাটি পালপাড়া পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য ও শিক্ষক প্রদীপ পাল বলেন, প্রতিবছর এই মন্দিরে ভিন্ন আঙ্গিকে প্রতিমা তৈরি করা হয়। এবার এই পূজা মন্ডপের প্রতিমাগুলো তৈরী করতে প্রায় ১০০ কেজি চিনিগুঁড়া ধান ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরির পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হয়েছে আরও কয়েকদিন আগে। এরই মধ্যে ধানের প্রতিমা দেখতে মন্দিরে ভিড় করছেন অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপদ পাল বলেন, এবার যুব কমিটির আয়োজনে এক লাখ টাকার মতো খরচ করে ধানের প্রতিমা নির্মাণ হয়েছে। ধানের প্রতিমা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে অচেনা মানুষের ভিড়ে মুখর হচ্ছে পূজা মন্ডপ। পূজা শুরু হলে আমাদের যে স্বেচ্ছাসেবকরা আছে তা দিয়ে মন্দিরের শৃঙ্খলা কতটুকু রক্ষা করা যাবে জানি না। তাই প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা দরকার আমাদের।

পূজা মন্ডপে আসা অঞ্জলি পাল বলেন, মুরারিকাটি পালপাড়ায় চল্লিশটি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার বসবাস করেন। এবার এ দুর্গাপূজা উদযাপনে প্রথম এত সুন্দর প্রতিমা তৈরি করেছে যুব কমিটির সদস্যরা। যা সত্যি প্রশংসিত।

কলরোয়া পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক সন্দিপ রায় বলেন, ২০ অক্টোবর থেকে দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে। প্রতিমা বিসর্জন হবে ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যা রাতে। এবার কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৪৮টি পূজামন্ডপে দুর্গোৎসব উদযাপিত হবে। শারদীয়া দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আশা করছি শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দুর্গাপূজা শেষ হবে।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজা যাতে সবাই শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গে উদযাপন করতে পারে এজন্য প্রতিটি মন্ডপে বাড়তি নজরদারি রাখা হবে। মন্ডপে আনসার, গ্রাম পুলিশসহ থানা পুলিশের সমন্বয়ে কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা পূজা মন্ডপের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!