সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ৫নং কেড়াগাছি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে বিএনপির কিছু চিহ্নিত ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে এলাকার অরাজকতা ও ত্রাস সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের শহীদ ইন্তাজ আলী সরদারের ছেলে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম আফজাল হোসেন হাবিল এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি গত ইউপি নির্বাচনে বিপুল ভোটে কেড়াগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছি। আমরা পারিবারিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর সাবেক এম সি এ এম এল এ, সাবেক এমপি মমতাজ আহমেদ আমার আপন চাচা। আমার পিতা ইন্তাজ আলী ৭১ যুদ্ধের সময় শহীদ হন। কেড়াগাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ভুট্টোলাল গাইন গত নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু জন বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তাকে মানুষ ভোট দেয়নি। পক্ষান্তরে আমি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হই।
এবারও কৌশলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। নৌকার পাওয়ার পর থেকে এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি, খুন, জখমসহ নানান হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। তিনি এলাকায় বলে বেড়াচ্ছেন, ‘নৌকা প্রতীক নিয়ে এসেছি, কাউকে ভোট দেওয়া লাগবে না, আমার ভোট পুলিশ করে দেবে’। আমার বিরোধীতা করলে এলাকায় কাউকে থাকতে দিব না। মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করাসহ বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন।
আফজাল হোসেন হাবিল আরো বলেন, আমরা তিন জন প্রার্থী যথাক্রমে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মারুফ হোসেন (মটর সাইকেল প্রতীক), আমি নিজে ইউনিয়ন আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের নির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, (আনারস প্রতীক) এবং ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ভুট্টোলাল গাইন (নৌকা প্রতীক) কেড়াগাছী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করছি। আমাদের দুই প্রার্থীর দাবি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হোক। মানুষ নির্ভয়ে ভোট প্রদান করুক। জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হোক চেয়ারম্যান। কিন্তু নেীকা প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন নিজের পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখে আমাদের নির্বাচনী শো ডাউনে বাধা সৃষ্টি, নির্বাচনী অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অতর্কিত হামলা চালিয়ে এলাকার পরিবেশকে উত্তেজিত করে তুলেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টো লালের নেতৃত্বে শফিকুর রহমান বাবুসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বোয়ালিয়ায় মটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মারুফ হোসেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুর করে গুড়িয়ে দেয়। সে সময় ভুট্টোলাল বলেন, ‘এখানে নৌকা ছাড়া আর কোন প্রার্থীর কার্যালয় থাকবে না, নৌকার প্রার্থী ছাড়া এ ইউনিয়নে আর কোন প্রার্থীরা থাকবে না, থানা পুলিশ সবই আমার পক্ষে রয়েছে মর্মে হুমকি প্রদর্শন করেন’।
এ ঘটনায় মটরসাইকেলের প্রার্থী পার্শ্ববর্তী একটি নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় বন্ধ করে দেন। সে সময় কলারোয়া থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার পক্ষে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে বোয়ালিয়া এলাকায় পৌছলে ভুট্টোলাল গাইন ও তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীসহ বিএনপির কিছু লোকজন অতর্কিত মিছিলে হামলা চালায়। এসময় গ্রামবাসীর সাথে তার ভাড়াটিয়া বাহিনীর সংঘর্ষ হলে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। এঘটনাকে পুজি করে ভুট্টোলাল গাইন এলাকার দুই শতাধিক মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি সহ অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনের বিধি ভঙ্গকারী ভুট্টোলাল গাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক এলাকায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম