বিশ্ব আজ থমকে গেছে করোনার থাবায়। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। একই সাথে আরেকটি সংকট দেখা যায় করোনায় মারা যাওয়া মানুষের দাফন বা সৎকারে। মৃতের স্বজনেরা লাশ দাফন বা সৎকারে ভয় পাচ্ছিলেন, তখন যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন/ সৎকারের কাজে এগিয়ে আসেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন খুলনা শাখার স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ। গত বছর জুন থেকে খুলনায় করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মানুষের দাফন ও সৎকারে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনটি।
২১ জুন সোমবার পর্যন্ত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন খুলনা শাখার ব্যবস্থাপনায় একশ’টি মৃতদেহের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ৭৯ জন, গোপালগঞ্জে ১১ জন, বাগেরহাটে তিন জন, নড়াইলে তিন জন এবং সাতক্ষীরায় চার জনের দাফন ও সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। খুলনা শাখা অফিসের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এ দাফন কার্যক্রম।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষিত ছয় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী খুলনাসহ দেশের ১৮টি কেন্দ্র থেকে সারাদেশে করোনায় মৃত লাশের দাফন/সৎকারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। খুলনায় ৩০ জনের একটি প্রশিক্ষিত টিম কাজ করছে। করোনায় মৃত মহিলা এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্যে রয়েছে আলাদা টিম।
গত ২৫ বছর যাবত কোয়ান্টাম অন্যান্য মানবিক সেবা কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রমও পরিচালনা করে আসছে। শত শত লাশ দাফনের অভিজ্ঞতা রয়েছে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীদের। কিন্তু করোনায় মৃতদের দাফনের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ আলাদা, হৃদয়বিদারক, অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন খুলনা শাখার দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক মুস্তফা আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যবিধি এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে ইসলামী ফাউন্ডেশনের দাফনবিধি মেনে কাজ করে থাকি। মহিলাদের পর্দার বিধান মেনে দাফন কাফনের জন্যে নয় সদস্যের একটি প্রশিক্ষিত মহিলা টিম রয়েছে। যারা ইতোমধ্যে ২৪টি লাশ দাফন করেছে। আর সনাতনদের জন্যে সৎকারে দক্ষ ছয় সদস্যের একটি টিম রয়েছে, যারা সনাতন সৎকারবিধি মেনে পুরো কাজটি পরিচালনা করেন। এ পর্যন্ত দশ জনের সৎকার সম্পন্ন করেছে এ টিম।
তিনি আরো বলেন, করোনায় মৃতের দাফন সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন খুলনা শাখার ০১৭৪০-৯৩৯৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও কোয়ান্টাম ওয়েব সাইট quantummethod.org.bd এই ঠিকানায় গিয়ে অনলাইনে দানের মাধ্যমে এই মহতী কাজে আপনিও অংশগ্রহণ করতে পারেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই
